Mamata Banerjee

কড়া নজরে পঞ্চায়েত ভোট, কালীঘাটে শীর্ষ নেতাদের বৈঠক ডাকলেন নেত্রী মমতা, নেপথ্যে ‘সাগরদিঘি বার্তা’?

তৃণমূল সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য দল কী কৌশল নিতে পারে, তা নিয়ে ১৭ তারিখের বৈঠকে নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তৃণমূলনেত্রী। উঠে আসবে সাগরদিঘির উপনির্বাচনে হারের প্রসঙ্গও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৩ ১০:৫৬
Share:

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কালীঘাটে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক ডাকলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।

কালীঘাটের বাড়িতে দলের শীর্ষ নেতাদের জরুরি বৈঠকে ডাকলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী শুক্রবার, ১৭ মার্চ ওই বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে হাজির থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্য শীর্ষ নেতারা। মনে করা হচ্ছে, পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতির কারণেই ওই বৈঠক ডেকেছেন মমতা।

Advertisement

আগামী মে মাসে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তৃণমূল সূত্রের খবর, শুক্রবারের বৈঠকে সেই নির্বাচনের জন্য দলীয় কর্মসূচি এবং নীতি নির্ধারণ করা হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য দল কী কী কৌশল নিতে পারে, তা নিয়ে এখন থেকেই নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন দলনেত্রী স্বয়ং। তৃণমূলের শীর্ষ নেতারাই শুধুমাত্র এই বৈঠকে হাজির থাকবেন। ইতিমধ্যেই ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, সুব্রত বক্সীদের কাছে বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ চলে গিয়েছে।

দলের একটি সূত্রের দাবি, ১৭ তারিখের বৈঠকে উঠে আসবে সাগরদিঘির উপনির্বাচনে অপ্রত্যাশিত হারের প্রসঙ্গও। উপনির্বাচনে ধাক্কার পর নড়েচড়ে বসেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। হারের কারণ খুঁজতে মমতা তড়িঘড়ি পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। বিধানসভায় মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ঘরে বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী জাভেদ খান, সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান এবং সংখ্যালঘু প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানী প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। পরাজয়ের ২৫টি কারণ উঠে আসে আলোচনায়।

Advertisement

সেই ২৫টি কারণ উল্লেখ করে কমিটির একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে খবর। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই রিপোর্ট জমা পড়ার কথা দলনেত্রী মমতার হাতে। তেমন হলে কালীঘাটের বৈঠকে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে সেই রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে পরামর্শ এবং নির্দেশ দিতে পারেন তৃণমূলনেত্রী।

তৃণমূল সূত্রের খবর, সাগরদিঘির ফলাফল নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। বস্তুত, অনেকে তাঁর উদ্বেগকে ‘গভীর’ বিশেষণও দিচ্ছেন। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই উদ্বেগ প্রকাশও করে ফেলেছিলেন মমতা। মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য তাঁকে বলতে চেয়েছিলেন, প্রার্থী বাছাই ঠিক হয়নি। মমতা তা শুনে বৈঠকেই উষ্মা প্রকাশ করেন। বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজনের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীকে খানিকটা ‘আবেগপ্রবণ’ও দেখিয়েছিল। যদিও তার কোনও আনুষ্ঠানিক সমর্থন মেলেনি। কিন্তু সাগরদিঘির ফলাফল যে মমতা এবং সামগ্রিক ভাবে তৃণমূলের কাছে জরুরি ‘বার্তা’ পৌঁছে দিয়েছে, ঘটনাপ্রবাহে তা স্পষ্ট।

সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের কাছে প্রায় ২৩ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এই হারের পর শাসক শিবিরের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, সংখ্যালঘু ভোট কি ধীরে ধীরে শাসকদলের দিক থেকে সরে যাচ্ছে? সূত্রের খবর, এ বিষয়ে শুক্রবারের বৈঠকে বিস্তারিত পর্যালোচনা করতে পারেন দলনেত্রী। কেন সাগরদিঘিতে হারতে হল, পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য কী কী করণীয়, তা আলোচনা করা হবে। সেই আলোচনা সাপেক্ষে পদক্ষেপও করা হবে দ্রুত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement