মনোরঞ্জন ব্যাপারী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাজেট অধিবেশনে শেষ বার যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল, তখন বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে আলাদা করে ডেকে মৃদু বকুনি দিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় প্রায় প্রতি দিনই নেটমাধ্যমে বিতর্কিত পোস্ট করে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলছিলেন মনোরঞ্জন। তার পর ফের বুধবার নবান্নে সাক্ষাৎ হল মমতা-মনোরঞ্জনের। তফসিলি জাতি কাউন্সিলের বৈঠক ছিল বুধবার। সেই বৈঠকেই মমতা বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জনকে দেখে এক গাল হেসে বললেন, ‘‘আমার আসল লোক।’’
বুধবার তফসিলি জাতির নতুন কাউন্সিলের বৈঠক ছিল নবান্নে। সেখানে কাউন্সিলের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে হাজির ছিলেন দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির প্রধান মনোরঞ্জনও। অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে কথা বলার মাঝেই মনোরঞ্জনকে ডেকে তাঁর মতামত জানতে চান মমতা। তিনি বলেন, ‘‘কী এ বার তো আমার আসল লোক, দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির মনোরঞ্জন ব্যাপারী সাহেব বলুন।’’
এই সে দিনও নেটমাধ্যমে বলাগড়ের স্থানীয় তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে অন্য সুরে বেজেছেন মনোরঞ্জন। বিধানসভায় মনোরঞ্জনের সেই অতি নেটমাধ্যম সক্রিয়তা নিয়েই সতর্ক করেছিলেন মমতা। তাতে যদিও কাজ হয়নি। কিছু দিন বিরতি নিয়ে আবার নেটমাধ্যমে ফিরেছেন। লিখেছেন, দল থেকে ভুয়ো তৃণমূলীদের দূর করে তবেই ছাড়বেন। ফলে আবারও দলের তরফে সতর্ক করা হয়েছে। আনন্দবাজার অনলাইনকে মনোরঞ্জন নিজেই জানিয়েছিলেন, ‘‘আমি আর কোনও কথা বলব না যা বলার জেলা সভাপতি বলবেন।’’
বুধবার নবান্নে বৈঠকে অবশ্য দেখা গেল মনোরঞ্জনের সঙ্গে বেশ খোশ মেজাজেই কথা বলছেন মমতা। এমনকি বলাগড়ে দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির শাখা খোলার প্রস্তাবও প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মঞ্জুর করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকেই প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দেন, ‘‘বলাগড়ে ওই অ্যাকাডেমির কথা উনি কথা অনেক দিন ধরেই বলছিলেন। ওটা দেখে দিও।’’
বৈঠকে অবশ্য মমতার প্রশংসাই করেছেন মনোরঞ্জন। পরে তাঁকে দলিত সাহিত্য নিয়ে নভেম্বর ডিসেম্বরে রাজ্য সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রত্যেক জেলা থেকে পাঁচ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে ওই সম্মেলন হবে। একই সঙ্গে মনোরঞ্জনকে দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমিতে নিজের বইয়ের অনুবাদ রাখার অনুরোধও করেন মুখ্যমন্ত্রী।