সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তফসিলি জাতির উন্নয়নে পশ্চিমবঙ্গ অন্য সব রাজ্যের থেকে এগিয়ে রয়েছে। বুধবার এমন দাবিই করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তফসিলি জাতির পুনর্গঠিত কাউন্সিলের বৈঠক ছিল নবান্নে। মমতা সেখানে তফসিলি জাতির উন্নয়নের খতিয়ান জানান। বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গই একমাত্র রাজ্য যেখানে ওয়েস্ট বেঙ্গল শিডিউল কাস্ট অ্যাডভাইসরি কাউন্সিল তৈরি হয়েছে। নিম্নবর্গীয়দের মানুষের জন্য আমরা যা করে দিয়েছি আর কেউ পারেনি।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগের বৈঠকে যা যা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তার প্রায় প্রত্যেকটাই পূরণ করা হয়ে গিয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে আর যা যা কাজ হবে তার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। তফসিলিদের জন্য পেনশন, লক্ষ্মীর ভান্ডার, শিক্ষাশ্রী, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির স্কুল-সহ একাধিক প্রকল্পের কথা জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘জন্ম থেকে মৃত্যু, বিয়ে থেকে পড়াশোনা সব কিছুর জন্য আমাদের প্রকল্প রয়েছে। নিম্নবর্গীয়দের উন্নতিতে আমাদের সরকার যা করেছে তা আর কোনও রাজ্যে হয়নি।’’
মমতা জানিয়েছেন, তফসিলি শংসাপত্র পাওয়ার প্রক্রিয়া গত ১০ বছরে অনেক সুগম হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তফসিলি জাতিভুক্ত ১ কোটি ১৪ লক্ষ মানুষকে শংসাপত্র দিয়েছে তাঁর সরকার। এর মধ্যে শুধু গত এক বছরে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে প্রায় ১৭ লক্ষ। ২০১২ সালের পর থেকে ৬ গুণ বেড়েছে তফসিলিদের জন্য বরাদ্দও। ৩৬০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২,৭৭২ কোটি টাকা। চাকরি ক্ষেত্রে সংরক্ষণে বেড়ে হয়েছে ২২ শতাংশ। আগামী পাঁচ বছরে তফসিলিদের জন্য ১০০টি স্কুল বানানোর প্রস্তুতিও শুরু করেছে তাঁর সরকার। ৭৩ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে দেওয়া হয়েছে বিশেষ স্কলারশিপও।
তফসিলিদের জন্য কাজ করতে গিয়ে ছোটখাটো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক দুষ্টুমি করছে। ইউবিআইয়ের বদলে এখন পিএনবি এসেছে। তবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে যাতে কারও সমস্যা না হয় সে জন্য দুয়ারে সরকারে ব্যাঙ্কের কাউন্টার থাকবে।’’ তফসিলিদের ২০ লক্ষ পাকা বাড়ি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, ‘‘আগে মাটির বাড়িগুলো পাকা করব। তার পর বাকিরা গুরুত্ব পাবে।’’ কাউন্সিলের এক সদস্য জানিয়েছিলেন তাঁর এলাকায় অনেককেই ত্রিপলের নীচে থাকতে হচ্ছে। মমতার নিদান, ‘‘তাঁরাও অগ্রাধিকার পাবেন।’’ এমনকি কারা মাটির বাড়ি বা ত্রিপলের নীচে থাকছেন, তা জানতে ড্রোনে উড়িয়ে সার্ভে করা হবে।