নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় মধ্যমগ্রামের পদযাত্রায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ
ছাত্রসমাজকে সামনের সারিতে রেখে কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলনের নতুন অভিমুখ তৈরি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় এবার আজ শুক্রবার থেকে রানী রাসমনি রোডে দলের ছাত্রসংগঠনকে অবস্থান শুরু করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। লাগাতার এই কর্মসূচিতে দলের নেতা ও মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। কলকাতা, পুরুলিয়া, শিলিগুড়ির পর নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মধ্যমগ্রাম থেকে বারাসাত পর্যন্ত মিছিল করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃষ্টির মধ্যেও ভিড় ছিল ব্যাপক।
নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শুরু দলের আন্দোলনে নতুন পর্ব যোগ করতে চলেছে তৃণমূল। এদিন উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে এ সংক্রান্ত প্রতিবাদ কর্মসূচির মঞ্চে সেই বার্তা দিয়ে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীরা এখন ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে ব্যস্ত। সে কাজ চলবে। পাশাপাশি নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এই অবস্থানও চলবে।’’
প্রসঙ্গত, জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে পড়ুয়ারা যেভাবে পথে নেমেছিলেন, তাতে বারবার সমর্থন জানিয়েছিলেন মমতা। একাধিক সভায় পড়ুয়াদের সেই আন্দোলনকে আরও জোরদার করার আহ্বানও জানিয়েছিলেন তিনি। জেএনইউ-তে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলার পরেও তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে দোষীদের শাস্তি দাবি করেছিলেন তিনি। দেশব্যাপী ছাত্রছাত্রীদের এই অবস্থানের সঙ্গে নিজের দলের ছাত্রসংগঠনকেও সক্রিয়ভাবে জুড়ে দিতে চেয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে সিএএ এবং এনআরসি’র বিরুদ্ধে একটি গান লিখে সুর করেছেন। গেয়েছেন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। সেখানে মমতা লিখেছেন, ‘‘আমরা সবাই এদেশের নাগরিক/ দেশটাকে বুকে ধরে রাখবে, তোমরা যাঁরা ঘৃণা ছড়াও/ তাঁরা শুধুই কাঁদবে কাঁদবে।’’
আরও পড়ুন: স্পর্শ করতে পারবে না কেউ, মতুয়াদের মমতা
পাঁচ কিলোমিটার এই পথে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হেঁটেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি এবং মন্ত্রীরাও। দু’দফার বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে বহু মানুষ হাত নেড়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে।
এদিন তাঁর হাঁটার সময় একটি অ্যাম্বুল্যান্স চলে এলে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তার জন্য রাস্তা করে দিয়েছেন। উল্লেখ্য গত সোমবার কৃষ্ণনগরের তাঁর সভায় রোগীসহ অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকে পড়ায় তা আটকে দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হলেও দিলীপবাবু নিজের সেই অবস্থানে অনড়। এদিনও তিনি বলেছেন, অ্যাম্বুল্যান্সে রোগী ছিল না। চক্রান্ত করে তাঁর সভায় অ্যাম্বুলেন্সটি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: তফসিলি কমিশন রুখতে চায় কংগ্রেস ও বাম : মমতা