মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস, লুট, হিংসার অভিযোগ তুলে ব়ৃহস্পতিবার বিধানসভার বাদল অধিবেশনে সরব হয়েছিল বিজেপির পরিষদীয় দল। অধিবেশন থেকে ওয়াক আউট করে বাইরে এসে বাছা বাছা বিশেষণে শাসকদল তৃণমূল ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু বিরোধী-শূন্য বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিজেপি তথা শুভেন্দুদের জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে বিজেপির প্রাপ্ত আসনের পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বললেন, ‘‘ভোট লুট হলে এত আসন পেল কোথা থেকে?’’ মমতা বৃহস্পতিবার পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি পেয়েছে ৯,৯৯০টি আসন। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৭,৮৫৫টি পেয়েছে তৃণমূল, বিজেপি পেয়েছে ১,০৭৪টি। জেলা পরিষদে তৃণমূল ৮৭৯টি, বিজেপি ৩১টি, কংগ্রেস ১৪টি পেয়েছে। ভোট লুট হলে পেল কোথা থেকে?’’
পাশাপাশি, বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার গত পঞ্চায়েত ভোটের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় ৯৭ শতাংশ আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতেনি? আর এখানে ৮৭ শতাংশ আসনে ভোট হয়েছে। ২০১৮ সালে ৬৫ শতাংশ আসনে ভোট হয়েছিল।’’ পাঁচ বছর আগের প়ঞ্চায়েত ভোটে ৩৫ শতাংশ আসন বিনা লড়াইয়ে জিতেছিল শাসক দল। যা নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপি ১৮টি আসন পাওয়ার পর অনেকে বলেছিলেন, মানুষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে না পারার রাগ মিটিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, মমতা ব়ৃহস্পতিবার বোঝাতে চান, গত বারের চেয়ে এ বার অনেক বেশি আসনে ভোট হয়েছে। আর যে বিজেপি এত লম্বাচওড়া কথা বলছে তাদের শাসনে ত্রিপুরায় কী হয়েছিল?
যদিও পরে সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে তৃণমূল যা করেছে তা লোকসভায় সুদে-আসলে ফেরত পাবে।’’ কাঁথি এবং তমলুক—দু’টি লোকসভা আসনেই বিজেপি জিতবে বলে দাবি বিরোধী দলনেতার। অন্য দিকে, শুভেন্দুকে খোঁচা দিতে গিয়ে নাম না-করে মমতা বিধানসভার অধিবেশনে বলেছেন, ‘‘নিজের জেলায় হারল কী ভাবে? নন্দীগ্রামে ১০,০০০ ভোটে হার। নাম নিচ্ছি না। নাম নিতে লজ্জা হয়।’’