নদিয়ায় বিজেপি নিশানা মমতার

মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরের গর্ভমেন্ট কলেজের সভা থেকে দলীয় কর্মীদের প্রতি  মুখ্যমন্ত্রীর বার্তাও তাই রাজনৈতিক। তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘‘প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ দখল করতে হবে। অন্য কেউ এলে কাজে বাধা দেবে।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৩
Share:

ছিল পরিষেবা বিতরণের প্রশাসনিক সভা। কিন্তু তা হয়ে দাঁড়াল পুরোদস্তুর রাজনৈতিক মঞ্চ। পাঁচ মাসের মধ্যেই যখন রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট তখন মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরে রাজনীতি আসাই স্বাভাবিক।

Advertisement

মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরের গর্ভমেন্ট কলেজের সভা থেকে দলীয় কর্মীদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর বার্তাও তাই রাজনৈতিক। তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘‘প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ দখল করতে হবে। অন্য কেউ এলে কাজে বাধা দেবে।’’ কিন্তু কাজে কারা বাধা দিতে পারেন, সেই ইঙ্গিতও মমতার বক্তব্যেই মিলেছে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে কংগ্রেসের নামই নেননি। এক বার মাত্র মুখে আনেন বামেদের কথা। বরং বিজেপিকেই মূল নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নোট বাতিলের নামে মানুষের ভাত কেড়ে নিয়েছে। জিএসটি-র নামে চার আনার নকুল দানারও ক্যাশমেমো দিতে বলছে! এদের থেকে সাবধান।’’

মহারাষ্ট্রে চাষিদের আত্মহত্যা থেকে বিভাজনের রাজনীতি, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা কেটে নেওয়া থেকে বাম আমলের ধারের ধাক্কা কোনও কিছুই বাদ যায়নি মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতায়। সবক্ষেত্রেই তিনি কাঠগড়ায় তুলেছেন বিজেপিকে। যা শুনে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দেবশ্রী চৌধুরী পাল্টা বলেন,‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি ১৯টি রাজ্যে এখন বিজেপি সরকার চালাচ্ছে। কোথাও কখনও এমন আজগুবি অভিযোগ ওঠে না। এ রাজ্যে কী ভাবে সরকার চলছে সবাই জানেন। আয়নায় নিজেকে দেখুন তারপর মোদীজির বিচার করবেন।’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর বিচারে অবশ্য কেন্দ্র যা করছে তা আসলে বঞ্চনা। সবার জন্য স্বাস্থ্য বিমার প্রকল্পের তীব্র সমালোচনা করে মমতা বলেন,‘‘ওরা বলছে, বিমার ৪০% টাকা দিতে হবে রাজ্যকেই। রাজ্যের যদি টাকা থাকে সে নিজেই করবে। তুমি রাজ্যকে বাধ্য করতে পার না।’’ তার পরেই তাঁর চ্যালেঞ্জ, ‘‘আমরা বিনে পয়সায় চিকিৎসা দিই। বেডের জন্য, ওযুধের জন্য কোনও টাকা লাগে না। এক মাত্র আমাদের রাজ্যেই হয়। আমাদের কাছ থেকে শিখে যাও।’’

চাষিদের আয় দ্বিগুণ করতে কেন্দ্রীয় বাজেটের ঘোষণা নিয়েও বিদ্রুপ করেন মমতা। তাঁর কথায়,‘‘দেশে ১২ হাজার চাষি আত্মঘাতী হয়েছেন। মহারাষ্ট্রেই সবচেয়ে বেশি। এখন বলছে, কৃষকদের আয় বাড়াব। কী করে বাড়াবে? টাকা কোথায়?’’

এ দিন কেন্দ্রের ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পের সঙ্গে কন্যাশ্রী’র তুলনা টানেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, বেটি বাঁচাও প্রকল্পের জন্য গোটা দেশে মাত্র ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। সেখানে কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। মমতার আক্ষেপ, ‘‘ব্যাঙ্ক বলছে, নগদ টাকা জমা নেবে না। তা হলে ব্যাঙ্ক কি ক্যাশের বদলে অ্যাশ (ছাই) নেবে। গরিব মানুষ ব্যাঙ্কে টাকা জমা না রাখলে কোথায় রাখবে?’’ তাঁর মতে, এ ভাবে নানা বেসরকারি লগ্নি সংস্থায় টাকা রাখার প্রবণতা বাড়াচ্ছে কেন্দ্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement