হাসিমারার সুভাষিণী চা বাগানে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। ছবি: নারায়ণ দে
দুই জেলা মিলিয়ে চা শ্রমিক পরিবারের সংখ্যা কত? সুভাষিণী চা বাগানে মঙ্গলবার বিকেলে প্রথমে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জবাব আসে, প্রায় তিন লক্ষ। সূত্রের খবর, সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে ফোন করে তিনি তিন লক্ষ পরিবারকে কম্বল বা শীতবস্ত্র দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেন। যা শুনে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ভোটের জন্য এই কর্মসূচি নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বাস্তবে তা কতটা সফল হবে, বলা খুব কঠিন। জবাবে তৃণমূলের দাবি, ভোট নয়, এটা একেবারেই মানবিক সিদ্ধান্ত।
অথচ এ দিন সুভাষিণী চা বাগানের যাওয়ার কথাই ছিল না মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসন সূত্রের খবর, তিনি মঙ্গলবার বিকেলে হাসিমারার বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নেমেই জানতে চান, কাছেপিঠে কোন বাগানে যাওয়া যাবে? তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির প্রশাসনিক কর্তারা জানান, সুভাষিণী চা বাগানেই যাওয়া যায়। এখানেই বৃহস্পতিবার তাঁর কর্মসূচি রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় মালঙ্গি লজের বদলে ঘুরে যায় চা বাগানের দিকে। তাঁর সঙ্গী ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী চা বাগানের গির্জা লাইনে গাড়ি থেকে নেমে এলাকাবাসীর কাছে খোঁজ নেন, তাঁরা সরকারি সুবিধা পাচ্ছেন কি না। সূত্রের দাবি, স্থানীয়েরা মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে সমস্যার কথা বলতে থাকেন। বৃদ্ধা ইন্দুদেবী পাসোয়ান বলেন, “আমরা যে ভাঙাচোরা বাড়িতে বাস করি, সেটা মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি।” আর এক বাসিন্দা বিনয় টোপ্পো বলেন, “আমাদের বাড়ির পাশেই মুখ্যমন্ত্রী অনেক বার কর্মসূচি করেছেন। কিন্তু এই প্রথম আমাদের মাঝে এলেন। আশা করি, এ বার সমস্যা মিটবে।”
সূত্রের দাবি, তখনই মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলা মিলিয়ে কত চা শ্রমিক পরিবার রয়েছে। সংখ্যাটি প্রায় তিন লক্ষ— এই তথ্য জানার পরে বাগান থেকেই তিনি মুখ্যসচিবকে ফোন করে তিন লক্ষ কম্বল বা শীতবস্ত্রের ব্যবস্থা করে তা বিলি করার নির্দেশ দেন। কিছু কম্বল বিলি করেন নিজের হাতেও। ঘটনাচক্রে, উত্তর ২৪ পরগনায় মুখ্যমন্ত্রীর এক কম্বল বিলির অনুষ্ঠানে কিছু খামতি থেকে গিয়েছিল বলে সূত্রের দাবি। যত কম্বল এবং শীতবস্ত্র আসার কথা ছিল, তা সেখানে আসেনি বলেও ওই সূত্রটির দাবি। প্রশ্ন উঠেছে, চা বাগানে এত শীতবস্ত্র বিলির ক্ষেত্রেও নতুন করে কোনও সমস্যা দেখা দেবে না তো? জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি, এখনও নির্দেশ আসেনি। তবে কম্বল আছে। অসুবিধা হবে না। আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনাও বলেন, “আমাদের কাছে শীতবস্ত্র পর্যাপ্ত রয়েছে।”