Mamata Banerjee New Announcement

এ বার পাড়াতেই সরকার! মমতার নতুন ঘোষণা নবান্ন থেকে, সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কিছু পরামর্শ, প্রতিশ্রুতিও

কিন্তু দুয়ারে সরকার থাকা সত্ত্বেও কেন নতুন এই ব্যবস্থা? সামনে লোকসভা ভোট বলেই কি সরকারের তরফে আরও একটি নতুন জনমুখী প্রকল্প আনা হল? এ প্রশ্ন ওঠার আগেই জবাব দিয়েছেন মমতা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৪৭
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

সরকারকে ব্লক স্তরে পৌঁছে দিয়েছেন আগেই। মঙ্গলবার মমতা জানালেন এ বার তাঁর সরকার পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে মানুষের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করবে। মমতা বললেন, ‘‘আমাদের দুয়ারে সরকার চলছে। কিন্তু আরেকটা পরিকল্পনা করেছি আমরা। এ বার পাড়ায় পাড়ায় সমাধান গোছের একটা ব্যবস্থা হবে। পোলিং স্টেশন অনুযায়ী তিন জন করে অফিসার বসবেন। যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে বা দরকার থাকে, সেখানে জানাবেন।’’

Advertisement

গোটা রাজ্যে পাড়ায় পাড়ায় এমন ‘সমাধান’-এর ব্যবস্থা শুরু হবে আগামী শনিবার অর্থাৎ ২০ জানুয়ারি থেকে। চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মমতা নিজেই এই তারিখ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, কী কী সুবিধা থাকতে চলেছে এই পাড়ায় সমাধানের কেন্দ্রগুলিতে। এই প্রকল্পের একটি নামও দিয়েছেন মমতা।

জনসংযোগ প্রকল্প

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এই প্রকল্প সবদিক থেকে স্পেশ্যাল তাই এর নাম হবে জনসংযোগ প্রোগ্রাম। কী হবে এই জনসংযোগ প্রোগ্রামে? যদি কারও কোনও শংসাপত্র নিয়ে অভিযোগ থাকে, বিশেষ করে তফসিলি জাতি এবং জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্তরা, তাঁরা সেই সমস্যার কথা জানাতে পারবেন। এ ছাড়া কেউ রেশন না পেলে, লক্ষ্মীর ভান্ডারে বঞ্চিত হলে, কৃষক ভাতা থেকে বঞ্চিত হলে এখানে নাম লেখাতে পারবেন। এমনকি, মমতা জানিয়েছেন, মৎস্যচাষীদের কারও মৃত্যু হলে সরকারের তরফে যে দু’লক্ষ টাকা অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়, তা পেতে চাইলেও এই কেন্দ্রে নাম লেখানো যাবে। নাম লেখানো যাবে কৃষক পরিবারের কারও মৃত্যুতে সাহায্যের প্রয়োজন হলেও। এমনকি, এই পাড়ায় সমাধান কেন্দ্রে পরিযায়ী শ্রমিকেরাও নিজেদের বঞ্চনার কথা জানাতে পারবে বলে জানিয়েছেন মমতা।

দুয়ারের পর পাড়ায় কেন?

কিন্তু দুয়ারে সরকার থাকা সত্ত্বেও কেন নতুন এই ব্যবস্থা? সামনে লোকসভা ভোট বলেই কি সরকারের তরফে আরও একটি নতুন জনমুখী প্রকল্প আনা হল? এ প্রশ্ন ওঠার আগেই জবাব দিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এমন অনেক মানুষ আছেন যাঁরা ব্লকে যেতে পারেন না। বা দুয়ারে সরকারে গিয়েছেন কিন্তু কাজটা হয়নি। তাঁদের জন্যই এই ব্যবস্থা। নীচু তলায় কিছু লোক থাকে যাঁরা কাজ না করে বার বার মানুষকে ঘোরায়। উঁচু তলায় যেমন এ ধরনের লোক থাকে নিচু তলাতেও থাকে। তাই এ বার একটা পাড়ায় পাড়ায় সমাধানের ব্যবস্থা করেছি।

যতটা কুলোবে দিয়ে দেব

খুব শীঘ্রই লক্ষ্মীর ভান্ডার এবং বিধবা ভাতা নিয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে, নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতা। মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’র পরিষেবায় যে সমস্ত আবেদন এসেছে, খুব শীঘ্রই তার সমাধান করা হবে। মূলত লক্ষ্মীর ভান্ডার এবং বিধবা ভাতা নিয়েই বেশি আবেদন এসেছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘‘যতটা কুলোবে দিয়ে দেব। আর বাকি যা অনুরোধ এসেছে, কিছু কিছু এদিক ওদিক করে করে করে দেওয়া হবে।

একটা দোকান কর না!

সমস্যার সমাধানের কথা বলতে বলতেই রাজ্যের যুব সম্প্রদায়কে কর্মসংস্থানের উপায়ও বাতলেছেন মমতা। ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করে মমতা বলেন, ‘‘যুবকদের বলছি ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড নাও। পাঁচ লক্ষ টাকা করে দিচ্ছে সরকার। রাজ্য সরকারই সেই ঋণের গ্যারেন্টার। ঋণের জন্য তো তোমাদের ব্যাঙ্কে ছোটাছুটি করতে হচ্ছে না। তা হলে নেবে না কেন?’’ ওই টাকা নিয়ে কী করতে হবে তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘‘একটা দোকান কর না বাপু। ভাল হবে তো। রেস্তরাঁ কর। এখন খুব চলে। হোম ডেলিভারি চলে। এক এক জন মহিলাকে দেখি সংসার চালান হোম ডেলিভারি করে।’’

জল প্রতিশ্রুতি

ঘরে ঘরে জল পৌঁছে যাবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে। নবান্ন থেকে জানিয়েছেন মমতা। এ ব্যাপারে বিরোধীদের ঘরে ঘরে জল পৌঁছে দেওয়ার স্লোগানকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ঘরে ঘরে জল পৌঁছে দিচ্ছে কে? রাজ্য সরকার দিচ্ছে। আমি বলছি, সবার ঘরে জল পৌঁছে যাবে এ বছর ডিসেম্বর বা ২০২৫ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে।

আরও দু’টি

গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার প্রশংসা করেছেন মমতা। জানিয়েছেন, গঙ্গাসাগরে তীর্থ করতে আসা মানুষের সংখ্যা ১ কোটি দশ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত মানুষকে সুষ্ঠ ভাবে সামলানো মুখের কথা নয়। প্রশাসন সেই কাজ করতে পেরেছে। তাই প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা প্রত্যেককে অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা। বলেছেন, আপনারা কঠোর পরিশ্রম করে ভাল ভাবে উতরে দিয়েছেন। আমি প্রত্যেককে তাঁদের কাজের প্রশংসাসূচক একটি চিঠি এবং একটি স্মারক উপহার দেব।

এ ছাড়া এশিয়ান গেমসের পদকজয়ীদের নেতাজী ইন্ডোর বা ধনধান্যে সম্মান জ্ঞাপনের ঘোষণাও মঙ্গলবার করেছেন মমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement