তথ্য কমিশনার নিয়োগ নিয়ে আবারও সরব হলেন বিরোধী দলনেতা। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে তথ্য কমিশনার নিয়োগে ‘পদ্ধতিগত ভুল’ নিয়ে আবারও সরব হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার দুপুরে দু’টি টুইট করেন তিনি। তার একটিতে তথ্য কমিশনার পদে রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি বীরেন্দ্রকে বসানোর পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু। অপর টুইটটিতে নবান্নের তরফে প্রকাশিত বীরেন্দ্রকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি তুলে ধরেন তিনি। এর পাশাপাশি, তথ্য কমিশনার নিয়োগে রাজ্য সরকারের ডাকা বৈঠকে কেন তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না, সেই কারণ সংবলিত চিঠিও প্রকাশ করেছেন শুভেন্দু। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকাকে পাঠানো চিঠিতে শুভেন্দু লেখেন, বৈঠকের আলোচ্যসূচি আগাম জানানোর যে রীতি, তা তাঁকে জানানো হয়নি। ওই একই দিনে রাজ্যপালকে পাঠানো চিঠিতে এই বৈঠক এবং নিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু। আরও এক বার সেই ‘পদ্ধতিগত ক্রটি’ নিয়েই সরব হলেন তিনি। নিজের টুইটে জুড়ে (ট্যাগ) নিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকেও।
বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, জাতীয় সংবাদপত্রগুলিতে কোনও বিজ্ঞাপন না দিয়ে, প্রয়োজনীয় প্রচার না করেই বীরেন্দ্রকে তথ্য কমিশনার পদে বেছে নেওয়া হয়েছে। ওই পদের জন্য ১৫ জন আবেদনপত্র জমা দিলেও বীরেন্দ্রকেই যে বেছে নেওয়া হবে, তা আগাম নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল বলে আগেই অভিযোগ করেন শুভেন্দু। তবে রাজ্য সরকারের তরফে এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়। সোমবারও শুভেন্দু লেখেন, শাসকদলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করার কারণে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বীরেন্দ্রকে পদ থেকে সরিয়ে দেয় জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ভোট সংক্রান্ত কাজ থেকে তাঁকে বিরত রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক বীরেন্দ্রকে, তথ্য কমিশনার হিসাবে নিযুক্ত করাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন শুভেন্দু।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে একটি বৈঠকে বীরেন্দ্রকে তথ্য কমিশনার হিসাবে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে রাজ্যপাল স্বাক্ষর করার পর। প্রোটোকল অনুযায়ী, রাজ্যের মুখ্য তথ্য কমিশনার নিয়োগের জন্য মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং পরিষদীয় মন্ত্রী বৈঠকে বসার কথা। প্রোটোকল মেনেই বিধানসভায় সেই বৈঠক হয়। কিন্তু তাতে উপস্থিত ছিলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও আগেই তিনি টুইট করে জানিয়ে দেন যে, কেন এই বৈঠকে থাকবেন না। তার আগে ৬ মাসের বেশি সময় ধরে রাজ্যের মুখ্য তথ্য কমিশনারের পদটি খালি পড়ে ছিল। রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, চলতি বছর ১৫ জন এই পদের জন্য আবেদন করেন। তাঁদের মধ্যে চার জন বয়সজনিত কারণে বাদ গিয়েছেন। এর পর ১১ জনের মধ্যে এক জনকে বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়। দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন প্রাক্তন আমলা এবং পুলিশকর্তারা। শেষে প্রাক্তন ডিজি বীরেন্দ্রকে নিয়োগ করা হয়। বৈঠক শেষে পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, ১০ জন এই পদের জন্য আবেদন করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার বীরেন্দ্রর নাম প্রস্তাব করেন।