আঁকায় মগ্ন মনোজিৎ —নিজস্ব চিত্র
পেন্সিল, কাঠ রং কিংবা তেল রং—হাতের কাছে যা পাচ্ছে, তাই দিয়ে সাদা কাগজে ফুটিয়ে তুলছে চমকপ্রদ ছবি। যা দেখে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের হরিশচন্দ্রপুর হাই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া মনোজিৎ মাইতি। বছর এগারোর এই খুদে লকডাউন, দুর্গাপুজো, বিভিন্ন উৎসব থেকে শুরু করে, প্রতিকৃতি— সব কিছু তুলির টানে ফুটিয়ে তুলে অবাক করেছে সকলকে।
বাবা মা দু’জনেই শিক্ষকতা করেন। ছোটোবেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি আঁকার প্রতি ঝোঁক ছিল মনোজিতের। প্রথম শ্রেণিতে পড়ার সময়েই প্রথম আঁকা শিখতে শুরু করেছিল মনোজিৎ। দু’বছর শেখার পর বাড়িতেই নিয়মিত প্র্যাকটিস করছে, এমনটাই জানা গেছে পরিবার সূত্রে। এর পর লকডাউনের আগে আবার মাস দুই আঁকার স্যারের কাছে সে গিয়েছিল। কিন্ত লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে তা আর সম্ভব হয়নি। তখন থেকে বাড়িতে নিজেই একের পর এক ছবি এঁকে ফেলেছে সে।
বিভিন্ন অনলাইন এবং তার বাইরেও অঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সে। ঘর ভর্তি প্রতিযোগিতার পুরস্কারে। ব্লক জেলা এবং রাজ্য স্তরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে এই ক্ষুদে। তার মধ্যে ব্লক স্তরে ও জেলা স্তরে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এ ছাড়াও অনলাইনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতাতেও অংশগ্রহণ করেছে সে।
মনোজিতের মা মনোমিতা মাইতি গর্বের সঙ্গে ছেলের কৃতিত্ব প্রসঙ্গে জানালেন, ‘‘ও ভালবেসে ড্রয়িং করে। আমরা কোনও দিনই বাধা দিই না। ও নিজের ইচ্ছেমতো করে। দু’বছর আঁকা শিখেছিল। তারপর বাড়িতেই অনুশীলন করে। আমরা চাই, ও যা ভালবাসে সেই দিকেই এগিয়ে যাক। ও যদি অ্যানিমেশন নিয়ে পড়তে চায়, সেটা নিয়েই পড়াব।”
খুদে শিল্পী মনোজিতের কথায়, “আমি ক্লাস ওয়ান থেকে দু’বছর আঁকা শিখেছিলাম। এখন বাড়িতেই অনুশীলন করি। ল্যান্ডস্কেপ এবং পোর্ট্রেট আঁকছি। এ ছাড়াও অশ্বত্থ পাতার উপরেও ড্রয়িং করেছি আমি।”
বড়ো হয়ে কী করতে চায় জিজ্ঞেস করা হলে সে বলে, পড়াশোনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে চায় সে এবং তার সঙ্গে ছবির আঁকার শখকেও সমান ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। ক্রিকেটেও একই রকম আগ্রহ আছে তার। অতিমারি পরিস্থিতির ফ্যাকাশে ভাবকে উজ্জ্বল আর রঙিন করে তুলছে তার হাতের তুলি।