— ছবি সংগৃহীত
জ্ঞানেশ্বরী প্রতারণা কাণ্ডে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য অন্যতম অভিযুক্ত অমৃতাভ চৌধুরী এবং তাঁর বাবা মিহির চৌধুরীর রক্তের নমুনা সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে বুধবার জানান সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, পিতাপুত্রকে একসঙ্গে এবং পৃথক ভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা ধরা পড়েছে।
সিবিআই সূত্রের খবর, ডিএনএ পরীক্ষার তদন্ত রিপোর্ট আসতে মাস দেড়েক সময় লাগবে। সেই রিপোর্ট আসার আগে পর্যন্ত জোড়াবাগানের ওই চৌধুরী পরিবারের উপরে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় থানাকে ওই পরিবারের বিষয়ে জানানো হয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। চৌধুরী পরিবারের উপরে নজরদারির বিষয়ে উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। প্রয়োজনে আদালতে আবেদন করে নজরদারির ব্যবস্থা করা হবে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
গত রবিবার থেকে ওই বাড়িতে বেশ কয়েক বার তল্লাশি অভিযানের সময় মিহিরের স্ত্রী অর্চনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। তদন্তকারীদের কথায়,
ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণের টাকা নেওয়া এবং বিবাহিত মেয়ের চাকরি পাওয়ার বিষয়ে অর্চনা অবগত ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘রেল দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে অমৃতাভ ও মিহিরের পাশাপাশি অর্চনা এবং তাঁদের বিবাহিত মেয়ে মহুয়া পাঠকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে মিহির ও অমৃতাভের বয়ানে অসংলগ্নতা ধরা পড়েছে।’’ সিবিআই জানিয়েছে, পিতাপুত্রকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার পরে পৃথক ভাবেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাঁদের। কিন্তু দু’জনেই নানা অছিলায় তদন্তকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে চলেছেন বলে তদন্তকারীদের অভিযোগ। সে-ক্ষেত্রে অর্চনা এবং মহুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মহুয়া রেল দফতরের কোন কোন আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হবে।
জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও স্বজনদের চাকরির বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলের আধিকারিকদের তালিকা ইতিমধ্যে সিবিআইয়ের হাতে এসেছে। নির্দিষ্ট ভাবে কোন কোন আধিকারিক অমৃতাভের নথি সংগ্রহ করে ক্ষতিপূরণ এবং মহুয়ার চাকরির বিষয়টি দেখাশোনা করেছিলেন, সেই বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এক তদন্তকারী জানান, রেল দফতরের আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্রে সংশ্লিষ্ট অসাধু চক্রের বহিরাগতদের হদিস মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্তেশ্বরে অমৃতাভের আত্মীয় অরুণাভ চৌধুরীর বক্তব্য, অমৃতাভ মাওবাদীদের কাছে বন্দি ছিলেন, এই ধরনের কোনও তথ্য তাঁদের জানা নেই। গোটা বিষয়টি নিয়ে তাঁরাও ধন্দে। সাড়ে তিন বছর আগে অমৃতাভ বাড়ি ফেরার পরে তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন বলে জানতেন তাঁরা।