মহুয়া মৈত্র (বাঁ দিকে), শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল কংগ্রেস মহুয়া মৈত্রকে জড়িয়ে ঘুষ-কাণ্ডের রেশ এ বার এসে পড়তে শুরু কর বাংলাতেও। অর্থ ও উপহারের বিনিময়ে মহুয়া সংদে আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপির সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ বার দাবি করলেন, ওই ‘অপরাধে’ শুধু সাংসদ-পদ খারিজ নয়, মহুয়ার জেলে যাওয়া উচিত! মহুয়ার বিরুদ্ধে ওটা অভিযোগ নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করেও তৃণমূল অবশ্য পাল্টা বলেছে, নারদ-কাণ্ডে এফআইআরে নাম থাকা বিরোধী দলনেতারই আগে গ্রেফতার হওয়া উচিত!
নবমীর পুজোয় অংশ নিতে বেরিয়ে সোমবার মহুয়া সংক্রান্ত প্রশ্নে শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘যিনি সংসদে দাঁড়িয়ে মোদীজি’কে গালিগালাজ করেন, আদানির এজেন্ট ইত্যাদি বলেন, তিনি কার এজেন্ট, এটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে! হীরানন্দানিজি প্রমাণ করে দিয়েছেন। আর নতুন করে কিছুই বলার নেই। আমরা পশ্চিমবঙ্গের জনগণ শুধুমাত্র তাঁর সাংসদ-পদ খারিজ চাই না। ওঁকে জেলে দেখতে চাই!’’ কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতার আরও মন্তব্য, ‘‘মা কালীর অভিশাপ পড়েছে! কিছু দিন আগেই মা কালীকে বলেছিলেন মদ খায়, সিগারেট খায়। সনাতন দেব-দেবীর প্রতি এমন অসম্মান দেখালে শাস্তির মুখে পড়তে হয়।’’ অর্থের বিনিময়ে প্রশ্নের অভিযোগ ওঠায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সংসদে অতীতে কী ব্যবস্থা হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গও তুলেছেন শুভেন্দু।
রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতাকে। কুণালের মন্তব্য, ‘‘ওই অভিযোগের (মহুয়া) বিষয়টা যথাস্থানে বিবেচনা হচ্ছে। কিন্তু যিনি এত কথা বলছেন, তাঁকে তো ক্যামেরার সামনে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। নারদ-কাণ্ডের এফআইআরে তাঁর নাম আছে। আগে শুভেন্দুকে কেন্দ্রীয় সংস্থা গ্রেফতার করুক, তার পরে বাকি কথা হবে!’’
বিতর্ক সামনে আসার পর থেকে মহুয়া-প্রশ্নে দূরত্ব রেখেই চলছিল তৃণমূল। দল কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না, বিজেপি সেই প্রশ্ন তোলায় তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন জানিয়েছেন, সংসদের এথিক্স কমিটির সিদ্ধান্ত দেখে দল যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, নেবে। আবার রবিবারই তৃণমূলের নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, সংসদে মহুয়া বেশি সরব বলেই তাঁর বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ হয়ে থাকতে পারে। ফিরহাদের মতে, ‘ডাল মে কুছ কালা হ্যায়’! রাজ্যের শাসক দলের তরফে স্পষ্ট অবস্থানের বদলে একাধিক সুর শোনা যাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নে মন্তব্য করতে চাননি শুভেন্দু। তবে তিনি বলেছেন, ‘‘সংসদের কমিটি এবং সিবিআই, এই দু’টি সংস্থাই তদন্ত করছে। তারা তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘এক যাত্রায় কখনওই পৃথক ফল হয় না। এর আগে এই একই কারণে সাংসদদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এ ক্ষেত্রেও এই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পশ্চিমবাংলা তথা ভারতের জনগণ চাইছে।’’