পরিবারের সঙ্গে অয়ন ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার নয়, আমলা হতে চায় এ বারের মাধ্যমিকে অষ্টম হওয়া অয়ন ঘোষ। কারণ, দাদুর ইচ্ছা ছিল নাতি দেশসেবা করুক। মেধা তালিকায় নাম ওঠার পর, দাদুর ছবি জড়িয়ে ধরে বারে বারে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছিল অয়ন। হাজারও শুভেচ্ছার মাঝে মনে পড়ছিল দাদুর ইচ্ছেপূরণের কথা। অয়নের কথায়: “আমি দেশসেবা করতে চাই, তবে রাজনৈতিক নেতা হওয়ার ইচ্ছে নেই। আমলা হয়ে দেশের সেবা করব।”
মঙ্গলবার ঘুমতে যাওয়ার আগে বাবাকে অয়ন বলেছিল, ‘‘দেখো আমি মেধাতালিকায় ঠিক জায়গা করে নেব। দাদুর স্বপ্নপূরণের প্রথম ধাপে ভাল ফল করবই।’’ বুধবার সকালে উঠে টিভির পর্যায় চোখ। মেধাতালিকায় অষ্টমস্থানে নিজের নাম শোনার পর চোখে জল চলে আসে তার। বাবা অজয়কুমার ঘোষ গৃহশিক্ষক। বাবাই তার শিক্ষাগুরু। ছোটবেলা থেকে তিনিই ছেলেকে পড়ান। আজ অজয়বাবু বলেন, “আমার বাবার ইচ্ছে ছিল, তাঁর নাতি দেশের সেবা করুক। আমিও তাই চাই। এর পর ও নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে। আইএএস অফিসারও হতে পারে। তা হলে দেশসেবা করতে পারবে।”
করোনা পরিস্থিতিতে বাড়িতে অবাধ প্রবেশ নিষিদ্ধ। কিন্তু বুধবারের সকালটা আচমকাই পাল্টে গেল, মাধ্যমিকের ফল বেরনোর পর। প্রথম স্থানাধিকারি অরিত্র পালের থেকে মাত্র ৯ নম্বর কম পেয়েছে অয়ন। দমদম বৈদ্যনাথ ইনস্টিটিউশনের ছাত্র অয়নের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৫। দমদমের মানিকপুরের বাড়ি অয়নের। ফুলের তোড়া, মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে হাজির হন আত্মীয় পরিজনরা। শুভেচ্ছাবার্তা আসছে ফোনের ওপার থেকেও।
আরও পড়ুন: জেলা ৮৪, কলকাতা ০, দেখে নিন সম্পূর্ণ মেধাতালিকা
দাদু সন্তোষকুমার ঘোষ নেই। নাতির সাফল্যে খুশি দিদা আরতি দাস। তিনি নাতিকে আশীর্বাদ করে বলেন, ‘‘ও যেন ওর ইচ্ছের পথে এগোতে পারে।’’ মা কল্পনাদেবী জানান, অয়ন জীবনে ভাল মানুষ হয়ে উঠুক এটাই তিনি চান। তাঁর কথায়, ‘‘ওর যা ইচ্ছে, সে ভাবে পড়াশোনা করুক, আমি সেটাই চাই।”
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে পাশের হারে রেকর্ড, প্রথম পূর্ব বর্ধমানের অরিত্র পাল
পড়াশোনায় যেমন ভাল অয়ন, তেমনই রহস্যরচনা পড়তে ভালবাসে সে। আপাতত উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে চায় দমদমের এই কৃতী ছাত্র।