Siddaramaiah

সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির মামলা

অভিযোগ, সিদ্দারামাইয়ার স্ত্রী পার্বতীকে অধিগৃহীত জমির তুলনায় অনেক বেশি মূল্যের গুরুত্বপূর্ণ ও ভাল জমি ক্ষতিপূরণ হিসেবে মহীশূর নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এমইউডিএ) পাইয়ে দিয়েছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:১০
Share:

কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। —ফাইল ছবি।

কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, জমি বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগে কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর করল লোকায়ুক্ত পুলিশ। বুধবার বেঙ্গালুরুর বিশেষ এমপি-এমএলএ আদালত এই নির্দেশ দিয়ে বলেছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট দিতে। সেই অনুযায়ী আজ প্রাথমিক পদক্ষেপ করা হল। সিদ্দারামাইয়া অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Advertisement

তথ্যের অধিকার কর্মী স্নেহময়ী কৃষ্ণের অভিযোগের ভিত্তিতে এই সংক্রান্ত মামলার সূত্রপাত। গত অগস্টে রাজ্যপাল ভাবরচন্দ গহলৌত মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিচার শুরুর অনুমোদন দিয়েছিলেন। চলতি মাসের গোড়ায় কর্নাটক হাই কোর্ট তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। গত বুধবার বেঙ্গালুরুর বিশেষ এমপি-এমএলএ আদালত অভিযোগের তদন্ত করার জন্য মহীশূরের লোকায়ুক্ত পুলিশকে নির্দেশ দেয়।

অভিযোগ, সিদ্দারামাইয়ার স্ত্রী পার্বতীকে অধিগৃহীত জমির তুলনায় অনেক বেশি মূল্যের গুরুত্বপূর্ণ ও ভাল জমি ক্ষতিপূরণ হিসেবে মহীশূর নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এমইউডিএ) পাইয়ে দিয়েছেন। প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে এফআইআরে নাম রয়েছে সিদ্দারামাইয়ার। সঙ্গে রয়েছে তাঁর স্ত্রী পার্বতী, শ্যালক মল্লিকার্জুন স্বামী এবং জনৈক দেবরাজুর নাম। দেবরাজুর থেকে জমি কিনে মল্লিকার্জুন উপহার দিয়েছিলেন পার্বতীকে।

Advertisement

মহীশূরের কাসারে গ্রামে মোট ৩.১৬ একর জমির ক্ষতিপূরণে এই দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। কর্নাটক বিজেপি অভিযোগ করেছে, টাকার অঙ্কে দুর্নীতি হয়েছে প্রায় চার হাজার কোটির। আরও অভিযোগ, ওই ৩.১৬ একর জমির আইনি নথিও ছিল না পার্বতীর কাছে।

সিদ্দারামাইয়া অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, আইন মেনেই সব হয়েছে। কোনও অনিয়ম হয়নি। কোর্টের নির্দেশের পরে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আরও বেশি করে সরব হয়েছেন কর্নাটকের বিজেপি নেতৃত্ব। তবে সেই দাবি পুরোপুরি নস্যাৎ করে দিয়েছেন সিদ্দারামাইয়া।

তিন দিনের সফরে সিদ্দারামাইয়া নিজের জেলা মহীশূরে রয়েছেন। আজ সেখানে তিনি বলেন, “আমি কোনও ভুল করিনি। এই প্রথম আমার বিরুদ্ধে একটা রাজনৈতিক মামলা হল। এটা একটা রাজনৈতিক মামলা। কথাটা আমি বিশেষ জোর দিয়ে বলছি।” বিরোধী শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ইডি, সিবিআইয়ের মতো তদন্তকারী সংস্থা ও রাজ্যপালের অফিসকে অপব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ তাঁর।

সিদ্দারামাইয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। দল কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর পাশে আছে বলে বার্তাও দিয়েছেন তিনি। খড়্গেও সিদ্দারামাইয়ার পদত্যাগের দাবি নাকচ করে বলেছেন, “চার্জশিট ফাইল হয়নি, (সিদ্দারামাইয়া) দোষীও সাব্যস্ত হননি।” গোধরা-কাণ্ডের পরে তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলেও যে গুজরাতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পদত্যাগ করেননি, সেই নজির টেনেছেন তিনি।

যাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এই তদন্ত, সেই স্নেহময়ী শেষ পর্যন্ত এফআইআর রুজু হওয়াটা লড়াইয়ের একটি জয় হিসেবে দেখছেন। অবশ্য মহীশূরের লোকায়ুক্ত পুলিশ সুপার উদেশা টি জে-র ভূমিকা নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। স্নেহময়ী অভিযোগ করেছেন, একেবারে প্রথম ধাপেই এফআইআর রুজু করতে গড়িমসি করে ইচ্ছাকৃত দেরি করেছেন পুলিশ সুপার। তদন্ত আদৌ স্বচ্ছ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি জানান, সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়ার জন্য হাই কোর্টের দ্বারস্থ হবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement