জনসংযোগ: মহিলাদের সঙ্গে তৃণমূলের রূপালী বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র
প্রায় এক নিঃশ্বাসে কথাগুলি বলে গেলেন তিনি— “আপনারা জানেন আজ কেন আমি এখানে। স্বামীকে হারিয়েছি সদ্য। স্বামীর মতোই আপনাদের পাশে থেকে কাজ করতে চাই। আপনারাও আমার পাশে থাকুন। আমাকে আশীর্বাদ করুন।’’ তার পর আবার একটু থেমে বললেন, ‘‘আমার স্বামী মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে এগিয়ে যেতে দিল না দুষ্কৃতীরা। বিজেপি তাঁকে খুন করেছে। সেই জন্যই আজ আমার এখানে আসা।”
বাগআঁচড়া স্কুলপাড়ার কাছে এক আমবাগানে রানাঘাট লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী রূপালী বিশ্বাসের সভা চলছে। সভা শেষ হতেই এগিয়ে এলেন মহিলারা। কেউ তাঁর মাথায় সস্নেহে হাত রাখলেন, কেউ বা করমর্দন করলেন। জিজ্ঞাসা করলেন, কেমন আছেন? পাল্টা প্রণাম জানিয়ে কথা বলছেন তৃণমূল প্রার্থী। কারও কোলে বাচ্চা দেখে এগিয়ে গিয়ে তার মাথায় হাত দিয়ে আদর করলেন। জিজ্ঞাসা করলেন, খাবার খেয়েছে কিনা। এর পর আবার পরের সভার জন্য ছোটা শুরু হল।
শুক্রবার সকাল থেকেই শান্তিপুর সরগরম ছিল লোকসভা ভোটে যুযুধান পক্ষের দুই প্রার্থীর প্রচার ঘিরে। এক দিকে তৃণমূলের রূপালি বিশ্বাস, অন্য দিকে বিজেপির মুকুটমণি অধিকারি। এ দিন সকাল দশটা নাগাদ শান্তিপুর শহরে তৃণমূলের দফতরে চলে আসেন রূপালি। সেখানে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কিছুটা পথ হেঁটে প্রচার চালিয়ে রওনা দেন হরিপুরে। সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য, জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু-সহ দলের অন্য নেতারা। মনসাতলায় এক দফা জনসংযোগ সেরে হিজুলি, গয়েশপুর, বাগআঁচড়া, বাবলা হয়ে যান নৃসিংহপুরে। মধ্যাহ্নভোজ সারেন দলীয় কর্মী সুজিত বর্মনের বাড়িতে দলের অন্যদের সঙ্গে। পরের গন্তব্য বেলগড়িয়া ১, বেলগড়িয়া ২ পঞ্চায়েত।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ভোটের প্রচারে বিজেপির মুকুটমণি অধিকারী। নিজস্ব চিত্র
অন্য দিকে, এদিন বিজেপি প্রার্থী মুকুটমণি দুপুর বারোটা নাগাদ শান্তিপুরের গোবিন্দপুর কালীবাড়িতে প্রথমে পুজো দেন। তার পর কিছুটা রাস্তা পায়ে হেঁটে আশপাশের মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সেখান থেকে চলে যান শান্তিপুর পাবলিক লাইব্রেরি হলে। সেখানে কর্মিসভায় যোগ দেন তিনি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে শান্তিপুরের মেলের মাঠ এলাকায় খুন হন বিজেপি কর্মী বিপ্লব সিকদার। এ দিন তাঁর বাড়িতেও যান বিজেপি প্রার্থী। কথা বলেন নিহত দলীয় কর্মীর পরিবারের সঙ্গে। তাঁকে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিপ্লবের মা-স্ত্রী। মুকুটমণি স্বান্তনা দিয়ে বলেন, “ভেঙে পড়বেন না। আমাদের দল আপনাদের পাশে আছে। আমিও আপনাদের পাশে থাকব।” বিপ্লবের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়েই দলীয় এক কর্মীর বাড়িতে মেঝেতে বসে মধ্যাহ্নভোজ সারেন বিজেপি প্রার্থী। বলেন, “ঈশ্বর সর্বশক্তিমান। তিনিই পারেন অন্যায়, অত্যাচার, একনায়কতন্ত্রের অবসান ঘটাতে। জনসাধারন আমাদের শক্তি। তাঁরাই আমাদের যোগ্য জায়গায় নিয়ে যাবেন। মানুষের মনের মধ্যে রয়েছে বিজেপি।’’