ফাইল চিত্র
সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদে যে ভাবে নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সেই ভাষায় সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার কথাও বলা নেই বলে আজ যুক্তি দিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।
সংবিধানের এই ৩২৪ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েই নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গে শেষ দফার ভোটে নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রচার বন্ধ করে দিয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, নির্বাচন কমিশন নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে কি না।
আজ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের ভোট পরিচালনা, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আর কোনও অনুচ্ছেদে কোনও প্রতিষ্ঠানকে কোনও প্রক্রিয়া পরিচালনা, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর প্রসঙ্গেও সংবিধানের ৭৪ অনুচ্ছেদে শুধু সহজ কথায় বলা রয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রী পরিষদ থাকবে রাষ্ট্রপতিকে সাহায্য করা ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য। সেখানেও পরিচালনা, নির্দেশ, নিয়ন্ত্রণের মতো শব্দ নেই। যদি সংবিধান পরিষদে ৩২৪ অনুচ্ছেদ নিয়ে বিতর্ক দেখা যায়, তা হলে দেখা যাবে বি আর অম্বেডকর এর ব্যাখ্যা করেছেন।’’
অমিত শাহর রোড শো ঘিরে গণ্ডগোলের পরে পশ্চিমবঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রচার বন্ধ করে দিয়েছিল কমিশন। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহর বিরুদ্ধে নির্বাচন বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ব্যবস্থা না নেওয়ায়, এ বার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার নেতৃত্বে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারই যে নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করে, সেই ব্যবস্থায় বদল প্রয়োজন কি না।
আজ দিল্লিতে এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রণব মনে করিয়ে দিয়েছেন, প্রথম থেকে এখনও পর্যন্ত সমস্ত নির্বাচন কমিশনারকে সরকারই নিয়োগ করে এসেছে। বিচারপতি নিয়োগ বা সিবিআই ডিরেক্টর নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা বদল করে কোনও লাভ হয়েছে কি না, তা সময় বলবে। তাঁর যুক্তি, ‘‘আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে যদি মজবুত করতে হয়, মনে রাখতে হবে যে আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠানগুলো ভালই কাজ করছে। যদি গণতন্ত্র সফল হয়ে থাকে, তার বড় কারণ হল সুকুমার সেন থেকে বর্তমান নির্বাচন কমিশনার পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনারদের সঠিক ভোট পরিচালনা।’’ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মন্তব্য— খারাপ শ্রমিকরাই নিজেদের যন্ত্রপাতির সঙ্গে ঝগড়া করে। ভাল শ্রমিকরা জানে কী ভাবে সেগুলিকে ব্যবহার করতে হয়।