এই পোস্টার উদ্ধারেই শোরগোল পড়ে। নিজস্ব চিত্র
একটা পোস্টার। আর তাকে ঘিরেই যাবতীয় আলোচনা শহরে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের নামে পোস্টার দেখা যায়। ঘাটাল থানার জলসরায় একটি দোকানের টিনের দরজায় পরপর দু’টি পোস্টার সাঁটা ছিল। সাদা কাগজে কম্পিউটারে লেখা, ‘ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী গরু চুরি, সোনা চুরি এবং বালি পাচারে অভিযুক্ত ও তৃণমূলের দালাল ভারতী ঘোষকে আমরা মানছি না, মানব না।’ নীচে লেখা, ‘হয় প্রার্থী বদল চাই। নয়তো ভোট নোটা-য় চাই।’ কারও নাম না থাকলেও এ বক্তব্য যে বিজেপির যুব মোর্চার তা উল্লেখ রয়েছে পোস্টারে। যদিও বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সভাপতি রাজু আড়ি বলেন, “এই পোস্টারকে আমরা গুরুত্বই দিচ্ছি না। এটা তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের কাজ।”
তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘বিজেপি নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব এড়াতে আমাদের উপর দায় চাপাতে চাইছে। ভোট আরও সামনে এলে এমন আরও অনেক কিছু সামনে আসবে।’’ এই পোস্টার নিয়ে এ দিন রাত পর্যন্ত অবশ্য পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেও সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই পোস্টার নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, মঙ্গলবার ঘাটাল শহরের বিদ্যাসাগর হাইস্কুল মাঠে জনসভার পর কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া জগন্নাথ গোস্বামীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ভারতী। গঠন করেছিলেন ঘাটাল নির্বাচনী কমিটি। যদিও বৈঠক বা নির্বাচনী কমিটি গঠনের কথা জানা ছিল না বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের। পরিস্থিতি খারাপ আঁচ করে বুধবারই ডেবরায় বিজেপির জেলা সদর কাযার্লয়ে কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল শর্মাকেও হস্তক্ষেপ করতে হয় বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে ভারতীকে নিয়ে পোস্টার বিজেপির অন্দরের ‘অস্বস্তি’ কি আরও উস্কে দিল! এক বিজেপি নেতা বলেই ফেললেন, “অস্বস্তি তো রয়েইছে।সঙ্গে এই সব পোস্টার আরও ভয়ানক হবে।”
ভারতী নিজে বলছেন, ‘‘আমি খোঁজ নিয়েছি। কে করেছে তা-ও জানি। এটাই ওদের কাজ। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। তাই এটা করছে।’’ অন্তরাও দুষেছেন শাসক দলকেই। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা তৃণমূলের কাজ। দলের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে এটা করা হয়েছে। দলের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। প্রার্থীকে জেতাতে একজোট হয়ে লড়ছি।’’