কয়লা-অস্ত্রে মমতার তোপে সঙ্ঘ

পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে প্রচার-সভা থেকে শুক্রবার মমতা বলেন, ‘‘এখানে কয়লা মাফিয়া রয়েছে। এদের রোখার দায়িত্ব সিআইএসএফ-এর।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী ও সুশান্ত বণিক 

রানিগঞ্জ ও আসানসোল শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৪২
Share:

—ফাইল চিত্র।

শুধু বিজেপি নয়, অবৈধ কয়লার কারবারের সঙ্গে এ বার আরএসএসের নাম জড়ালেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগে একাধিক নির্বাচনী সভায় তিনি অভিযোগ করেছিলেন, আরএসএস রাজ্যের ভোটারদের প্রভাবিত করতে টাকা ছড়াচ্ছে।

Advertisement

পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে প্রচার-সভা থেকে শুক্রবার মমতা বলেন, ‘‘এখানে কয়লা মাফিয়া রয়েছে। এদের রোখার দায়িত্ব সিআইএসএফ-এর। কেন্দ্রীয় সংস্থার (ইসিএল) সম্পত্তি দেখে কেন্দ্রীয় পুলিশ (নিরাপত্তা বাহিনী)। তোমাদের পুলিশের অন্দরে কয়লা মাফিয়া রয়েছে।’’ সেই সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, ‘‘আরএসএস-এর নেতারা, বিজেপির সাংসদ এবং বিজেপি এখন টাকা নিয়ে দৌড়য়। ওরা বলে, তৃণমূল কোল মাফিয়া। যদি তা-ই হয়, তা হলে তোমার পুলিশ কী করছে? তোমরা সব থেকে বেশি টাকা কোল মাফিয়ার কাছে নাও।’’

আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়ের পাল্টা তোপ, ‘‘পাড়ায় পাড়ায় সবাই জানেন, কয়লার অবৈধ কারবারে কারা যুক্ত, সেই টাকা কাদের কাছে যায়। মিথ্যা বলে লাভ নেই।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বিজেপি এবং তৃণমূলের যোগসাজসে সিআইএসএফ ও রাজ্য পুলিশ কয়লা চুরিতে মদত দেয়। অভিযোগ অস্বীকার করেছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ। তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘কয়লা চুরির রমরমা বাম আমলেই শুরু হয়েছিল।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এলাকার সিটু, আইএনটিইউসি-সহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ, রানিগঞ্জ, বারাবনি, সালানপুর, জামুড়িয়া-সহ নানা এলাকায় বৈধ খনি থেকে কয়লা চুরি হয়। অবৈধ ভাবে খোলামুখ খনি, কুয়ো খাদ খুঁড়েও এই কারবার চলে। তাতে জড়িত ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, ‘মরসুমে’ (কার্যত বর্ষা বাদে সারা বছর) দৈনিক অন্তত দেড়শো ট্রাক (বহন ক্ষমতা ৪০ টন) চলে শুধু রানিগঞ্জে। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় দৈনিক চলা কয়লা পাচারের ট্রাকের সংখ্যা অন্তত তার দশ গুণ। এই বেআইনি কয়লার ক্রেতা মূলত এলাকার ইটভাটা, ছোট কারখানাগুলির একটা অংশ। সম্প্রতি বারাবনিতে সিপিএম প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়কে মারধরের অভিযোগ ওঠে কয়লা-দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বাবুলও বারাবনিতে কয়লা-চুরির অভিযোগ করেন।

ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানাচ্ছেন, কয়লা চুরিতে জড়িতদের গ্রেফতার করার ক্ষমতা সিআইএসএফের নেই। ইসিএলের নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে অভিযান চালিয়ে দুষ্কৃতীদের ধরে, সিআইএসএফ পুলিশে দেয়। তাঁর দাবি, ‘‘গত এক বছরে প্রায় পাঁচশো বার বিভিন্ন থানায় সংস্থার তরফে এ ধরনের অভিযোগ জানানো হয়েছে।’’ আসানসোলের পুলিশ-কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘‘ইসিএল বা সিআইএসএফ কয়লা চুরির অভিযোগ করলে সহযোগিতা করি। অভিযোগ পেলেই আইনি পদক্ষেপ করা হয়।’’ আসানসোলের সভায় বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এখানকার সাংসদ পাঁচ বছরে কাজ করেননি। মাঝে মাঝে এসে আসানসোলকে অশান্ত করেছেন। উনি একটুও বিশ্বাসযোগ্য নন।’’ বাবুলের জবাব, ‘‘এ বিষয়ে মন্তব্য করতে আমার রুচিতে বাধে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement