প্রার্থী ‘অপছন্দ’, ফাটলের ইঙ্গিত

অসিতের কথায়, ‘‘এমন একজনকে প্রয়োজন ছিল যাঁর ভাবমূর্তি হবে স্বচ্ছ। যিনি শ্রমিক, কৃষক, সাধারণ মানুষের মুখ হিসাবে পরিচিত হবেন। বিপ্লব ভট্ট প্রার্থী হওয়ায় জয় তো পরের কথা লড়াই সম্ভব নয়।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৮:০৯
Share:

প্রচারে বিপ্লব। নিজস্ব চিত্র

শক্তিক্ষয় চলছে। তাতে কি দ্বন্দ্ব কমেছে?

Advertisement

লোকসভা ভোটের আগে সিপিআইয়ের অন্দরে ফের উঠছে এই প্রশ্ন। কারণ, শুক্রবারই ২৫টি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছে বামেরা। মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হচ্ছেন সিপিআইয়ের বিপ্লব ভট্ট। ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। শনিবারই দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন সিপিআইয়ের জেলা কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য তথা শহরের পূর্ব লোকাল সম্পাদক অসিত বসাক। তিনি বলেন, ‘‘দল ঠিকভাবে প্রার্থী বাছাই করেনি। তাই আমি ইস্তফা দিয়েছি।” তিনি দাবি করেছেন, তাঁর সঙ্গে দল ছেড়েছেন আরও অনেকে। আজ, রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন অসিত।

অসিতের কথায়, ‘‘এমন একজনকে প্রয়োজন ছিল যাঁর ভাবমূর্তি হবে স্বচ্ছ। যিনি শ্রমিক, কৃষক, সাধারণ মানুষের মুখ হিসাবে পরিচিত হবেন। বিপ্লব ভট্ট প্রার্থী হওয়ায় জয় তো পরের কথা লড়াই সম্ভব নয়।’’ বর্তমান পরিস্থিতিতে শক্তি কমছে বামেদের। তাই ভোটের আগে প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের জেরে দল ছাড়লে আখেরে তো প্রতিপক্ষরাই লাভবান হবে? অসিতের জবাব, ‘‘প্রার্থী পছন্দ হয়নি বলেই দল ছেড়েছি। এর জেরে কেউ লাভবান হবে কি না, তা সময়ই বলবে।’’ তবে এর পাশাপাশি অসিত জানিয়ে দিয়েছেন, এখনই তাঁরা অন্য কোনও দলে যোগ দিচ্ছেন না।

Advertisement

ইস্তফার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ প্রার্থী। বিপ্লব বলেন, ‘‘আমার জানা নেই দলে ভাঙন ধরছে কি না। আমি দেখছি সকলেই আমার জন্য প্রচারে নেমেছেন।” আর সিপিআইয়ের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক অশোক সেনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ইস্তফাপত্র হাতে পাইনি। তবে কমিউনিস্টরা এই নির্বাচনে লড়াই করবে। এর পরে কে কী বলছে, কে কী করছে তা নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

দীর্ঘদিন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে দাপট দেখিয়েছে সিপিআই। একসময়ে এই লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন খড়্গপুর শহরের সিপিআই নেতা প্রয়াত নারায়ণ চৌবে। এর পরে সিপিআই সাংসদ প্রয়াত ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত ও প্রবোধ পাণ্ডা এই কেন্দ্র থেকেই জিতেছিলেন। সকলের সঙ্গে খড়্গপুরের যোগাযোগ ছিল নিবিড়। মূল কারণ ছিল শহরে শ্রমিক সংগঠনের প্রভাব। এ বারের বাম প্রার্থী বিপ্লব ভট্টও শহরের ভূমিপুত্র। ১৯৮৬ সাল থেকে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন আইটাকের সঙ্গে যুক্ত। বর্তমানে তিনি আইটাকের জেলা সম্পাদক। অসিত অবশ্য বলছেন, ‘‘এমন একজনকে প্রয়োজন ছিল যিনি শ্রমিক, কৃষক, সাধারণ মানুষের মুখ হিসাবে পরিচিত।’’ সবংয়ের ভূমিপুত্র মানস ভুঁইয়া মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়ানোর সুযোগ পেয়েছে তৃণমূল। বাম শিবিরে অবশ্য উলটপুরাণ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement