ফুল দিয়ে: কেন্দ্রীয় বাহিনীকে স্বাগত জানাচ্ছে পুলিশ। শুক্রবার দেগঙ্গায়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
লোকসভা ভোটের জন্য প্রথম দফায় রাজ্যে এসে পৌঁছল কেন্দ্রীয় বাহিনী। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এসেছে সাত কোম্পানি বাহিনী। রাতের মধ্যে আরও তিন কোম্পানি আসবে বলে জানিয়েছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতর। দশ কোম্পানির মধ্যে কলকাতায় থাকবে এক কোম্পানি।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ দিন একাধিক এলাকায় বাহিনী রুটমার্চ শুরু করে দিলেও জওয়ানদের কোন এলাকায়, কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, তার চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হতে পারে আজ, শনিবার উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈনের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের বৈঠকের পরে। আধিকারিকদের একাংশের যুক্তি, কমিশনকে দেওয়া প্রাথমিক তালিকায় গোলমালপ্রবণ এলাকা এবং হাঙ্গামাকারীদের সংখ্যার মধ্যে ফারাক থাকায় সেই রিপোর্ট সংশোধন করা হচ্ছে। আজ, শনিবারের বৈঠকে সংশোধিত সেই রিপোর্ট পেশ করার কথা জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের। তার নিরিখেই বাহিনী ব্যবহারের কৌশল চূড়ান্ত হতে পারে।
প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘বৈঠকের পরেই আশা করি পুরো বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’ রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপাররা নিজের নিজের জেলায় প্রয়োজন অনুযায়ী বাহিনী ব্যবহারের রূপরেখা তৈরি করবেন।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কলকাতায় বাহিনী রাখা হবে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে। জলপাইগুড়ির রানিনগর বিএসএফ ক্যাম্প থেকে ওই বাহিনী এসেছে। লালবাজার জানিয়েছে, প্রথম দফায় আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কলকাতা পুলিশের নয়টি ডিভিশনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। বিভিন্ন ডিভিশনের ডিসির নির্দেশে তাঁরা রুট মার্চ করবেন। আজ, শনিবার থেকেই শহরে রুট মার্চ করতে দেখা যেতে পারে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। যদিও কলকাতায় ভোট হবে একদম শেষ দফায়, ১৯ মে। ১১ এবং ১৮ এপ্রিল প্রথম দু’দফায় যে পাঁচটি কেন্দ্রে নির্বাচন, সেখানে বাহিনী কবে পৌঁছবে তা স্পষ্ট করেনি সিইও দফতর।
লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণা হতেই পঞ্চায়েত ভোটের স্মৃতি উসকে ফের গুলি-বোমাবাজি শুরু হয় চোপড়ায়। সোমবার লক্ষ্মীপুরে গুলিতে নিহত হন এক কংগ্রেস কর্মী। গত এক বছরে রাজনৈতিক হানাহানিতে এই এলাকায় ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত শতাধিক। শুক্রবার উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছেই দুপুর থেকে লক্ষ্মীপুরে টহল দেয়। একই সঙ্গে দাসপাড়া, ঘিরনিগাঁওয়ের মতো যে সব এলাকা পঞ্চায়েত ভোটের সময় উত্তপ্ত হয়েছিল, পুলিশের সঙ্গে বাহিনী সেখানেও গিয়েছে এ দিন।
দিঘায় এ দিন এক কোম্পানি সীমান্তরক্ষী বাহিনী পৌঁছেছে। ওড়িশা সীমানায় নাকা তল্লাশি করে তারা। পশ্চিম মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে আগে থেকেই।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর পুলিশ জেলার বাসন্তী এবং কুলতলিতে ২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। বাসন্তী এবং কুলতলিতে এক কোম্পানি করে বাহিনী রাখা হবে। ক্যানিং মহকুমার বিভিন্ন থানা এলাকায় রুট মার্চ করবে তারা। কুলতলির মেরিগঞ্জ ১ ও ২ পঞ্চায়েত, কুন্দখালি ও চুপড়িঝাড়া এলাকায় শনিবার থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী রুট মার্চ করবে।