উনিশ বছর পরে চোখের জল বিকাশের জন্য

২০০০ সালে খুন হয়ে ছিলেন বিকাশবাবু। পরে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও পরে তারা বেকসুর খালাস হয়ে যায়।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:০৫
Share:

অশ্রুসিক্ত: মঞ্জুদেবীর পাশে বসে চোখ মুছছেন বিদায়ী সাংসদ। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।

ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে উনিশটা বছর। প্রতি বছরের মতো অবশ্য এখনও তাঁর মৃত্যু দিবস পালন করেন ইছাপুরের মানুষ। লোকসভা ভোটের আবহেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

Advertisement

সোমবার সকালে ইছাপুর স্টোরবাজারে উত্তর ২৪ পরগনার সেই তৃণমূল যুব সভাপতি বিকাশ বসুর আবক্ষ মূর্তিতে মালা দিয়ে তাঁর খুনের ঘটনার সুবিচার চাইলেন ব্যারাকপুর লোকসভার প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদী। বললেন, ‘‘একজন মানুষকে আচমকা কয়েকজন এসে মেরে চলে গেল। কেউ কিছু জানতে পারল না। এই ঘটনার সঠিক বিচার হওয়া দরকার। সাধারণ মানুষেরও এই একই দাবি।’’ সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজনীতিতে গুন্ডামি চলতে পারে না। ২০০৯ সালের পর থেকে ব্যারাকপুরে গুন্ডামি অনেক কমেছে। এখন যেটুকু আছে তা-ও খতম হয়ে যাবে।’’

২০০০ সালে খুন হয়ে ছিলেন বিকাশবাবু। পরে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও পরে তারা বেকসুর খালাস হয়ে যায়। কিন্তু এত বছর পরে আচমকা কেন বিকাশবাবুর খুনের ঘটনার সুবিচার চাইলেন দীনেশবাবু— তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে নোয়াপাড়া বিধানসভা এলাকায়। বিরোধী রাজনৈতিক মহলের একাংশের কথায়, ‘‘আগে অর্জুন সিংহ থাকায় ভোটে কোনও সমস্যা হয়নি। এখন তো তিনি অন্য দলে। তাই বিকাশবাবুর খুনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়টিই কাজে লাগাতে চাইছেন তৃণমূল প্রার্থী।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এ দিন শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে বিকাশবাবুর স্ত্রী মঞ্জুদেবীর পাশে বসে পুরনো দিনের স্মৃতি মনে করে চোখের জল ফেলতে দেখা যায় দীনেশকে। পরে তিনি বলেন, ‘‘এক জননেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে নিজে থেকেই ওখানে হাজির হয়েছিলাম। ওঁর নামে বড় কনভেশন সেন্টার তৈরি হচ্ছে। আগামী দিনে বিকাশবাবুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল হওয়া উচিত।’’

তবে দীনেশবাবুর সঙ্গে মঞ্জুদেবীকে একই মঞ্চে দেখা গেলেও স্থানীয়েরা বলছেন অন্য কথা। তাঁরা জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত লোকসভা ভোটের প্রচারে কোথাও তেমন ভাবে দেখা যায়নি নোয়াপাড়ার বেশ কয়েক বছর আগেকার বিধায়ক মঞ্জুদেবীকে। এমনকী, ২০১৮ সালে বিধাসভা উপনির্বাচনে নোয়াপাড়া কেন্দ্রে মঞ্জুদেবীকে প্রার্থী না করে সুনীল সিংহকে টিকিট দিয়েছিল তৃণমূল। এরপরেই মঞ্জুদেবীর বিজেপি-তে যোগদান নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল। পরে অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরেই আস্থা প্রকাশ করেন মঞ্জুদেবী। সে সময়েও সুনীল সিংহের প্রচারেও দেখা মেলেনি তাঁর। যদিও দীনেশবাবুর দাবি, মঞ্জুদেবী সব সময় তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন।

এ দিনের অনুষ্ঠানে নোয়াপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক সুনীল সিংহ ও উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় ঘোষ উপস্থিত না থাকা নিয়েও তৈরি হয়েছে জল্পনা। যদিও সুনীলের দাবি, ‘‘আমি এ বিষয়ে জানতাম না। আমাকে কেউ নিমন্ত্রণ করেননি।’’ আর ‘‘দলীয় কর্মী অসুস্থ হয়ে কলকাতার হাসপাতালে রয়েছেন। সেখানে গিয়েছিলাম’’ বলছেন মলয়।

এ সবের মধ্যেই বিকাশের খুনের স্মৃতি উস্কে নোয়াপাড়ায় প্রচার শুরু করলেন দীনেশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement