Kali Puja

Electricity: কালীপুজোর দিন ঘুচল আঁধার

কিসমত-বাঘঝাঁপা গ্রামে ৩০টি লোধা-শবর পরিবারের বাস। পাঁচ মাস আগে বাজ পড়ে গ্রামের ট্রান্সফর্মারটি পুড়ে গিয়েছিল। আর মেরামত হয়নি।

Advertisement

রঞ্জন পাল

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২১ ০৬:০৯
Share:

আলো জ্বলল শবর গ্রামে নিজস্ব চিত্র।

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেই দোরে খিল দিতেন সবাই। আঁধার হওয়ার আগে কাজকর্ম সব সেরে নিতে হত। আলো বলতে যে মোমবাতি আর কেরোসিনের লম্ফ।

Advertisement

দীর্ঘ পাঁচ মাস আঁধার-যন্ত্রণা সয়েছেন ঝাড়গ্রাম ব্লকের কিসমত-বাঘঝাঁপা গ্রামের বাসিন্দারা। ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে যাওয়ায় লোধা-শবর অধ্যুষিত গ্রামটি পুরোপুরি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের নজরে আসায় বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া হয়। শেষে বৃহস্পতিবার, কালীপুজোর দিন সকালে বসে নতুন ট্রান্সফর্মার।

কিসমত-বাঘঝাঁপা গ্রামে ৩০টি লোধা-শবর পরিবারের বাস। পাঁচ মাস আগে বাজ পড়ে গ্রামের ট্রান্সফর্মারটি পুড়ে গিয়েছিল। আর মেরামত হয়নি। এ ক’মাস সন্ধ্যা নামার আগেই গ্রামের লোকজন সব কাজ মিটিয়ে ফেলতেন। রান্না সেরে নিতেন বাড়ির মেয়ে-বউরা। গ্রামের বাসিন্দা ভারতী ভক্তা বলছিলেন, ‘‘বিদ্যুৎ না থাকায় দিনের বেলায় সমস্ত কাজ সেরে নিতে হত। রাত হলেই খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়তাম।’’ স্থানীয় রাখাল ভক্তার কথায়, ‘‘সন্ধ্যায় মোমবাতি বা কেরোসিন দিয়ে লন্ঠন জ্বালাতে হত। অপেক্ষায় ছিলাম কবে আঁধার ঘুচবে।’’

Advertisement

জঙ্গলমহলের পিছিয়ে পড়া লোধা-শবরদের উন্নয়নে রয়েছে নানা প্রকল্প। সেখানে শবর গ্রামে একটা ট্রান্সফর্মার দিনের পর দিন বিকল হয়ে পড়ে থাকার ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, ওই গ্রামে বেশ কয়েকজনের বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়েছে। ঝাড়গ্রাম লোধা-শবর সেলের সদস্য খগেন্দ্রনাথ মান্ডি বলেন, ‘‘এতদিন ওঁরা আমাদেরকে জানাননি। বুধবার বিষয়টি শুনেই প্রশাসন জানিয়েছিলাম। আসলে লোধা-শবরদের বিষয়ে নজরদারি প্রয়োজন। সেটা থাকলে পাঁচ মাস অন্ধকারে থাকতে হত না।’’ খগেন্দ্রনাথ আরও জুড়ছেন, ‘‘করোনা আবহে খেটে-খাওয়া মানুষজনের কাজ নেই। ওঁরা বিদ্য়ুতের বিল মেটাবেন কী করে?’’

মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের কাছে বিষয়টি জানতে পেরে তৎপর হন বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার ঝাড়গ্রামের ডিভিশনাল ম্যানেজার উজ্জ্বল রায়। মূলত তাঁর উদ্যোগেই এ দিন সকালে গ্রামে নতুন ট্রান্সফর্মার বসে। উজ্জ্বল বলেন, ‘‘ওঁরা এত দিন জানাননি। আমরা জানতে পেরেই নতুন ট্রান্সফর্মার বসিয়ে দিয়েছি। গ্রামে আলো এসেছে।’’

দীপাবলিতে আঁধার ঘোচায় খুশির আলোয় ঝলমল ঝন্টু ভক্তা, রাখাল ভক্তার। ওঁরা বলছিলেন, ‘‘অমাবস্যার রাত নামার আগেই গ্রামে ফের আলো জ্বলল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement