প্রতি দিন প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষকে নিয়ে যাতায়াত করা লোকাল ট্রেনে কতটা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব তা নিয়ে সংশয় রয়েছে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদেরই। ফাইল চিত্র।
চতুর্থ দফার লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী রবিবার, ৩১ মে। তারপরের পর্যায়ে কোভিড মোকাবিলায় রাজ্যগুলি কী ভাবছে তা জানতে বৃহস্পতিবার সব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন ক্যাবিনেট সচিব। লকডাউনের মেয়াদ আর বাড়ানো হবে কি না, তা এখনও অজানা। এই পরিস্থিতিতে আগামী ১ জুন থেকে রাজ্যে লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো চালানোর বিরোধিতা করল রাজ্য।
এর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, কেন্দ্রের কাছে রাজ্য লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে। এর পর এ দিন রাতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর টুইট করে জানায়, এমন কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়নি রাজ্যের তরফ থেকে। এই খবরের কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই।
নবান্ন সূত্রে খবর,শহরতলির ট্রেন এবং মেট্রোর মতো গণপরিবহণ ব্যবস্থা চালু করার বিষয়ে রাজ্যের অভিমত জানতে চাওয়া হয় ওই বৈঠকে। রাজ্যের কোভিড চিত্রের উল্লেখ করে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ শহরতলির ট্রেন এবং মেট্রো পরিষেবা এখনই চালু না করার কথা জানান কেন্দ্রকে। প্রতিদিন শিয়ালদহ এবং হাওড়া স্টেশন থেকে পূর্ব এবং দক্ষিণ পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেনে প্রায় ২২ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেন। মেট্রো সফর করেন গড়ে প্রতি দিন প্রায় ৫ লাখ মানুষ। লোকাল ট্রেন ও মেট্রোয় আদৌ কতটা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব তা নিয়ে সংশয় রয়েছে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদেরই। ঠিক সেই কারণেই তাঁদের আশঙ্কা, লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো চালু হলে কোভিড সংক্রমণ লাগাম ছাড়া হয়ে পরিস্থিতি হাতের বাইরেও চলে যেতে পারে।নবান্ন সূত্রে খবর, সেই পরিস্থিতির কথা ব্যাখ্যা করেই লোকাল ট্রেন ও মেট্রো পরিষেবা চালুর ব্যাপারে রাজ্যের তরফে আপত্তির কথা জানানো হয়।
এ দিনের বৈঠকে ফের রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে জানানো হয়, পরিযায়ী শ্রমিকরা ফেরত আসার পর কী ভাবে রাজ্যে করোনা পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং উত্তর দিনাজপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। সূত্রের খবর, এ দিন কন্টেনমেন্ট জোনে পুরোপুরি লকডাউন রাখার কেন্দ্রীয় প্রস্তাবে সহমত জানায় রাজ্য। আলোচনা হয় শপিং মল খোলার বিষয়েও। ইতিমধ্যেই কর্নাটকে শপিং মল কর্তৃপক্ষগুলি রাজ্যের কাছে মল খোলার অনুমতি চেয়েছে। মল কর্তৃপক্ষ সরকারকে আশ্বস্ত করেছেন, তাঁরা সামাজিক দূরত্ব মেনে জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ‘লকডাউন এখনও চলছে নাকি? দেখে মনে হচ্ছে?’
সূত্রের খবর, এ দিন আমপানের ক্ষয়ক্ষতি নিয়েও কথা হয় রাজ্যের মুখ্য সচিবের সঙ্গে ক্যাবিনেট সচিবের। তবে নবান্ন সূত্রে ইঙ্গিত, কোনও বিষয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি কেন্দ্রকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্রকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: বাসের অপেক্ষায় লম্বা লাইন যাত্রীদের