অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য কামালুদ্দিনের দোতলা বাড়ি। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম
মুর্শিদাবাদের রানিনগরেও তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
অভিযোগ, রানিনগর-২ ব্লকের মালিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জাহাঙ্গির আলম ঘূর্ণিঝড়ে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থসাহায্য না করে নিজের মা এবং নিকটাত্মীয়দের নামে ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েছেন। মায়ের নামে ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছেন তিনি। ওই পঞ্চায়েতের আরও কয়েক জন সদস্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ, দোতলা, পাকা বাড়ির মালিক হয়েও স্ত্রী, নাবালিকা মেয়ে, জামাই, এমনকি, শাশুড়ির নামেও ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েছেন। এ নিয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন একদল স্থানীয় বাসিন্দা। ব্লক প্রশাসন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকারও করেছে।
শনিবার এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে জাহাঙ্গিরের জবাব, ‘‘তালিকা থেকে তো মায়ের নাম কাটিয়ে দিয়েছি। শুধু ভাইয়ের স্ত্রীর নামে সামান্য কিছু টাকা নিয়েছি।’’ কিন্তু ভাইয়ের তো পাকা বাড়ি! জাহাঙ্গির এ বার আমতা আমতা করে বলেন, ‘‘আসলে মায়ের ঘরটা ঝড়ে ভেঙে পড়েছে। ভাইকে বলেছি, ওই টাকাটা তুলে মাকে দিয়ে দিতে।’’
ওই পঞ্চায়েতেরই তৃণমূল সদস্য, কামালুদ্দিন তাঁর স্ত্রীর নামে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, কামালুদ্দিনের দোতলা পাকা বাড়ি রয়েছে। এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘গ্রামে আমার একটা কাঁচা বাড়ি আছে। ঝড়ে সেটারই ক্ষতি হয়েছে। সেই জন্য স্ত্রীর নামে টাকা নিয়েছিলাম। এ নিয়ে বিরোধীদের এত বাড়াবাড়ির কী আছে!’’ অভিযোগ নিয়ে রানিনগর-২ ব্লকের বিডিও পার্থ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মহকুমাশাসকের দফতর থেকে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: আমপান দুর্নীতিতে কঠোর ব্যবস্থা, বার্তা শিশিরের
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি, তৃণমূলের মোশারফ হোসেন এ দিন বলেন, ‘‘শুধু টাকা ফেরত দিয়েই বাঁচা যাবে না। রাজনৈতিক রং না দেখেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে।’’ রানিনগরের কংগ্রেস বিধায়ক ফিরোজা বেগম বলেন, ‘‘তৃণমূলের পঞ্চায়েত নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে মোটেই অবাক হচ্ছি না। এটাই ওদের দলের সংস্কৃতি!’’