বউবাজারের ঘটনা নিয়ে বৈঠক করতে কলকাতা পুরসভায় এসেছিলেন চৌরঙ্গীর বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় ও ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে। নিজস্ব চিত্র।
সেই বৌবাজার। আবারও একাধিক বাড়িতে ফাটল। আবারও গৃহহীন বেশ কিছু আতঙ্কিত পরিবার। তাদের জন্যই এ বার সরব হলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যয়। প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিলেন কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন (কেএমআরসিএল)-এর বিরুদ্ধে। শনিবার কলকাতা পুরসভায় এক বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি। কলকাতা পুরসভাকে নিজের অবস্থান জানানোর পাশাপাশি, সংবাদমাধ্যমের সামনেও ক্ষোভপ্রকাশ করেন চৌরঙ্গির বিধায়ক।
৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে-কে পাশে নিয়ে কেএমআরসিএলের বিরুদ্ধে শনিবার একের পর অভিযোগ করেন নয়না। তিনি বলেন, ‘‘মেট্রো কর্তৃপক্ষকে আগে লিখিত দিতে হবে যে, মেট্রো টিউব দিয়েই চলবে। তার জন্য উপরে কিছু হবে না। শিয়ালদহ-এসপ্ল্যানেডের মধ্যে মেট্রো চালাতে হলে কর্তৃপক্ষকে লিখিত দিতে হবে। কারণ, বিশ্বাস এক বার ভাঙলে ঠিক আছে। কিন্তু এই নিয়ে তৃতীয় বার বিশ্বাসভঙ্গ হল। মানুষ আর বিশ্বাস করতে চাইছেন না।’’
শনিবার পুরসভার যে বৈঠকে নয়না এসেছিলেন, তা শেষ পর্যন্ত হয়নি। কিন্তু আলাদা করে মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন নয়না। সেই আলোচনা শেষে তিনি বলেন, ‘‘জানতে পেরেছি, নীচের মাটি যতক্ষণ না স্থায়িত্ব পাবে, তত ক্ষণ উপরে ভাঙতে থাকবে। ফলে দু’পাশের ফুটপাথেই ফাটল ধরছে। আমরা এখন জানতে চাই, মাটির নীচে ঠিক কী হচ্ছে? আর কত দিন এমন পরিস্থিতি থাকবে! তিন বছর দু’মাস এই ঘটনা চলছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা সঠিক ভাবে জানতে চাইছি, এই ঘটনা আর কত দিন চলবে?মানুষগুলোর কী হবে? কারণ ২০১৯ সালের ভাঙনে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তাঁরা আজ খুব বিপদে আছেন। এখানে মানুষ উপরে থাকেন। নীচের অংশ ভাড়া দিয়ে দেন। বাড়ি যখন ভেঙে পড়ছে, তখন ভাড়াটে চলে যাচ্ছে, আর তাঁদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট দুর্গা পিতুরি লেন ও সেকরাপাড়া লেনের একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরেছিল। গত মে মাসে দুর্গা পিতুরি লেনের বাড়িতে ফের ফাটল ধরে। দু’টি ক্ষেত্রে ঘরছাড়া হন বহু মানুষ। এ বার মদন দত্ত লেন এবং বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের কিছু বাড়ি ও দোকানে ফাটল ধরেছে। বিশ্বরূপ জানিয়েছেন, ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত হাজারখানেক মানুষকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে।