—ফাইল চিত্র।
গত বছরের গোড়ায় স্কুলে স্কুলে মিড-ডে মিলের খাবারে প্রতি সপ্তাহে পড়ুয়া পিছু অতিরিক্ত ২০ টাকা ধার্য করা হয়েছিল। নজর ছিল পড়ুয়াদের অতিরিক্ত পুষ্টির দিকে। এ বারেও অন্তত প্রথম চার মাস পড়ুয়া পিছু ওই অতিরিক্ত ২০ টাকা ধার্য করার দাবি তুলেছেন বেশ কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা। তাঁদের মতে, নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত পুষ্টি পেলে পড়ুয়ারা স্কুলমুখো হতে উৎসাহিত হবে। যদিও জানুয়ারি শেষ হয়ে গেলেও তা নিয়ে উচ্চবাচ্য নেই সরকারের তরফে।
উল্লেখ্য, গত বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত অতিরিক্ত ওই পুষ্টির ব্যবস্থা করেছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। সেই অতিরিক্ত পুষ্টিতে পড়ুয়া পিছু মাসে ৮০ টাকা (প্রতি সপ্তাহে ২০ টাকা হিসাবে) চার মাসে ৩২০ টাকা ধার্য করা হয়েছিল। এর ফলে মিড-ডে মিলের দৈনন্দিন খাবার বাদেও পড়ুয়ারা সপ্তাহে একদিন করে একটি করে মরশুমি ফল, মুরগির মাংস, একাধিক ডিম পাচ্ছিল।
ডোমজুড়ের কেশবপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর দাসের কথায়, “গত বার চার মাসের এই অতিরিক্ত পুষ্টি বহু পড়ুয়াকে স্কুলমুখী করেছিল। গরিব পড়ুয়ারা সপ্তাহে একদিন মুরগির মাংস ও মরশুমি ফল পেয়ে খুশি ছিল। এ বারও অনেক পড়ুয়ার অভিভাবকেরা অতিরিক্ত ওই খাবার নিয়ে খোঁজখবর করছেন। দিলে গরিব পড়ুয়ারা খুব উপকৃত হবে।’’
প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘গত বার পঞ্চায়েত ভোট ছিল বলে সম্ভবত অতিরিক্ত পুষ্টি দেওয়া হয়েছিল। এখন তো পড়ুয়াদের নানা ধরনের পরিষেবা পাওয়া ভোটের উপর নির্ভর করে। এ বারও তো সামনে লোকসভা ভোট। এ বার একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব দেওয়ার সময় গত বছরগুলোর তুলনায় এগিয়ে দেওয়া হল। একই ভাবে এ বারও পড়ুয়াদের অতিরিক্ত পুষ্টি অন্তত চার মাস দেওয়া হোক।’’
যদিও এরকম কোনও সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি বলেই রাজ্য সরকারের এক শিক্ষা কর্তা জানান। মিড-ডে মিল বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘গত বছর ওই অতিরিক্ত পুষ্টি চার মাস দেওয়ার পরে পিছিয়ে পড়া কয়েকটি জেলায় তা আরও কয়েক মাস দেওয়ার পরিকল্পনা করা হলেও কেন্দ্র রাজি হয়নি। মিড-ডে মিল রাজ্য ও কেন্দ্রের যৌথ প্রকল্প। কেন্দ্র থেকে অনুমোদন দরকার।’’ যদিও শিক্ষকদের একাংশের মতে, গত বার যে চার মাস অতিরিক্ত পুষ্টি দেওয়া হয়েছিল, তাতে কেন্দ্রের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়নি। রাজ্যের সিদ্ধান্তে হয়েছিল। সদিচ্ছা থাকলে এ বারও চার মাস অতিরিক্ত পুষ্টি দেওয়াই যায়।