ফাইল চিত্র।
মাটিতে বসেই তাঁরা বিমানের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করেন। অথচ সেই এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) অফিসারদের লাইসেন্সের বন্দোবস্ত না-থাকায় বিশ্ব তালিকায় ভারতের নাম চলে গিয়েছে নেপাল-বাংলাদেশেরও পরে। এই অবস্থায় পাইলট-ইঞ্জিনিয়ারদের মতো এ বার এটিসি অফিসারদেরও লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অপেশাদার বিমান চালানোর জন্য প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স (পিপিএল) এবং বাণিজ্যিক বিমান চালানোর জন্য কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (সিপিএল) নিতে হয়। লাইসেন্স দেওয়া হয় বিমানের ইঞ্জিনিয়ারদেরও। সেই ধাঁচেই ভারতে প্রায় ২৩০০ এটিসি অফিসারকে লাইসেন্স দেওয়ার কাজ গত নভেম্বরে শুরু হয়ে গিয়েছে।
আশা করা হচ্ছে, এ বছরের মধ্যেই সেই কাজ শেষ করা যাবে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, ২২০০ অফিসারের লাইসেন্স তৈরি হয়ে গিয়েছে। ভারতে বিমান পরিবহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) এই লাইসেন্স দেবে।
কর্তৃপক্ষের এক কর্তা জানান, বিশ্বে বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রণ করে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইকাও)। বছর দুয়েক আগে আইকাও-এর প্রতিনিধিরা ভারতে অডিট করতে এসে দেখেন, এটিসি অফিসারদের কোনও লাইসেন্স নেই। এর ফলে বিশ্বের নিরিখে ভারতের স্থান অনেক নীচে চলে যায়। এক এটিসি-কর্তা বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ভারতের স্থান বাংলাদেশ, নেপালেরও নীচে। কেননা ওই দুই দেশেও এটিসি অফিসারদের লাইসেন্স রয়েছে।’’ এ দেশের এটিসি অফিসারেরা লাইসেন্স পেয়ে গেলে ভারতের পয়েন্ট এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যাবে এবং সে পৌঁছে যাবে ইউরোপের দেশগুলির কাছাকাছি।
এত দিন এটিসি অফিসারদের একটি বিভাগে কাজ করার দক্ষতার উপরে একটি ‘রেটিং’ দেওয়া হত। সেই রেটিং দিতেন বিভাগের কর্তারাই। আইকাও-এর প্রতিনিধিরা এর তীব্র বিরোধিতা করেন। বলা হয়, পাইলট, ইঞ্জিনিয়ারদের ক্ষেত্রে যেমন ডিজিসিএ প্রতিনিয়ত নজরদারি চালায় এবং তাঁদের লাইসেন্স দেওয়ার অধিকার যেমন ডিজিসিএ-র হাতে রয়েছে, তেমনই এটিসি অফিসারদের উপরেও এই নজরদারি প্রয়োজন।
ডিজিসিএ এই লাইসেন্স দেওয়ার অধিকার পাওয়ার পরে কোনও
এটিসি অফিসারের কোনও রকম গাফিলতি হলে তারা সঙ্গে সঙ্গে তাঁর লাইসেন্স রদ করতে পারবে। পাইলটেরা নির্দিষ্ট সময় পর্বে বিমান নিয়ে না-উড়লে ফের ককপিটে বসার আগে তাঁদের নতুন করে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। একই ভাবে যে-সব এটিসি অফিসার কিছু দিন সরাসরি বিমান নিয়ন্ত্রণের কাজ করবেন না, সেই কাজে ফিরতে চাইলে তাঁদেরও ফের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।