অঙ্কন: সুমন চৌধুরী
১। ছবি বিক্রি করে টাকা তোলা ঘোষিত। এতে কোনও অন্যায় নেই।
২। বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠী ও শিল্পপতিও এই ক্রেতার তালিকায়, এটাই তাৎপর্যপূর্ণ।
৩। এর মধ্যে বিস্তারিত যাচ্ছি না সারদা প্রসঙ্গে ঠিক যেটুকু জানি: সুদীপ্ত সেন ছবি কিনেছেন, এটা যেমন ঠিক, সুদীপ্ত সেন ছবি কেনেননি, কৌশলী বিবৃতিতে সেটাও ঠিক হতে পারে।
শুনতে হেঁয়ালি। কিন্তু, এটাই বাস্তব।
সুদীপ্ত সেন ছবি কিনেছিলেন, কিন্তু তার কোনও প্রমাণ নাও থাকতে পারে।
সুদীপ্ত সেন ছবি বাবদ নগদে টাকা দিয়েছিলেন, কিন্তু ছবিতে আগ্রহ ছিল না, ছবি হয়ত পানওনি হাতে।
প্রদর্শনী ও টাকা তোলার দায়িত্বে ছিল সৃঞ্জয় বোস ও শিবাজী পাঁজা।
সুদীপ্তকে এরাই কিনতে বলে। যোগাযোগ করে। সুদীপ্ত রাজি হন। সেই মত লেনদেন হয়।
আমি এতদিন এ নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু জিজ্ঞেস করিনি। ভোট প্রচারে আবার এটা এল বলেই সেন-এর কাছে জানতে চেয়েছিলাম।
তাঁর বক্তব্য: ছবি কেনা বাবদ সৃঞ্জয়কে নগদে টাকা দিয়েছি। কিন্তু, ছবি আমি পাইনি। তাছাড়া নেত্রীর ছবি কিনে খুশি করাই তো মূল কথা ছিল। ওঁর ছবিতে আমার কোনও আগ্রহ নেই। (এই যুক্তিটা অবশ্য প্রায় সব ক্রেতারই)
সুদীপ্তকে বলি: ১ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা?
জবাব ছিল: অতটা না। কম।
ছবি সত্যি পাননি?
মনে নেই। সৃঞ্জয় চেয়েছিল। দিয়ে দিয়েছি। টাকা বাকি রাখিনি। ২টো ছবি দেওয়ার কথা ছিল। পাঠিয়েছিল কিনা মনে নেই।
হতে পারে সেন ঠিক বলছেন। কম কিছু টাকা পাঠিয়েছিলেন।
b) হতে পারে সেন আমাকে বলছেন না। বিপুল টাকা দিয়েছিলেন।
c) কিন্তু ঘটনা হল, ছবি বাবদ একটি পরিমাণ টাকা তিনি সৃঞ্জয়কে দিয়েছিলেন।
এখন পুলিশ সরকারি নির্দেশ পালনে সেনকে দিয়ে অস্বীকার করাচ্ছে।
তাছাড়া, যদি ছবি সেন-এর কোনও অফিস বা বাড়িতে থাকত, পুলিশ তা সরিয়ে দিয়েছে। ফলে, সেন অস্বীকার করলেও বোঝা যাবে না।
‘জাগো বাংলা’/প্রদর্শনীর অ্যাকাউন্ট দেখা দরকার।
এখানে মনে রাখতে চাই, ‘জাগো বাংলা’-র খাতে বিজ্ঞাপণ এবং কীসব জটিল পদ্ধতিতে কিছু টাকা ঢুকত। পুজো সংখ্যা/প্রদর্শনীকে সামনে রেখে। সৃঞ্জয়, শিবাজী ছাড়া আর ২জন বিষয়টা করত। শোভন চ্যাটার্জি ও রাহুল টোডি। ওদের কথা থেকে বুঝতাম বিরাট কোনও অঙ্ক রূপান্তরের খেলা। সেটা ঠিক কীভাবে এসে কোথায় ঢুকত, আমার পক্ষে জানা সম্ভব ছিল না। কৌতুহলও সেদিন ছিল না। আজ মনে হচ্ছে, সেদিন কৌতুহলি থাকা উচিত ছিল।
প্রশ্ন: এবার তো প্রদর্শনী হল না। ভোটের টাকা এল তাহলে কোথা থেকে? আর যদি প্রদর্শনী ছাড়াই তহবিল হয়, তাহলে আগের ক্ষেত্রে কি প্রদর্শনী শুধু ‘ক্যামোফ্লেজ’ ছিল?
তদন্ত, সুদীপ্ত সেন, পুলিশ ও টিএমসি
১। রোজ, প্রতি মূহূর্তে বুঝতে পারছি সেন, পুলিশ, শাসক দল ‘গট-আপ’ চলছে।
২। সেন গ্রেফতার ঠিকই, বহু মামলাও কিন্তু, কোনও একটা আশ্বাসে আছে।
৩। এফআইআর-এ নাম থাকা সত্ত্বেও পুলিশ যে ভাবে ওর বউকে চার্জশিট থেকে বাদ দিল ---।
৪। যখনই সারদা নিয়ে অস্বস্তিকর কোনও ইস্যু হচ্ছে, সেনকে দিয়ে বিবৃতি করিয়ে কনট্র্যাডিক্ট করাচ্ছে। এটা হচ্ছে একেবারে পরিকল্পনামাফিক।
৫। আমার একটি বিবৃতির ক্ষেত্রেও তাই হল। নির্দিষ্ট কিছুই বলিনি। রজ্জুকে সর্পভ্রম করে ডিডি অফিসারেরা এসে সেন-এর ক্লাস নিয়ে পাল্টা বিবৃতি করালেন।
সেন আলিপুর জেল থেকে এসেছিলেন। সঙ্গে নেগেল (সারদা সংস্থার ডিরেক্টর)/চৌহান (সুদীপ্ত সেনের ব্যক্তিগত গাড়িচালক)। কিন্তু, নেগেলদের আলাদা ফেরত পাঠান হল। বিধাননগর থেকে আইসি-ইসিপিএস পিনাকি (গোড়া থেকে এই কেস-এ) নামে একজন এলেন।
পিপি-র উল্টোদিকের ঘরে সেনকে নিয়ে বসলেন। রুদ্ধদ্বার। সঙ্গে নিয়ে আলাদা গাড়িতে সেনকে তুলে দিতে গেলেন। যাওয়ার পথে প্রেস-এর সামনে বলিয়ে দিলেন, কুণাল ভুল বলছে।
৬। বিধাননগর কোর্টে এলেই দেখি সেন-এর সঙ্গে ডিডি অফিসারদের মিটিং চলছে।
৭। টিএমসি-র কয়েকজন নিজেদের আড়াল করতে সেনকে নিজেদের কথায় চালাচ্ছে কৌশলে/চাপে/আশ্বাসে।
৮। বহু ঘটনা, তথ্যপ্রমাণ লোপাট, সাক্ষ্য প্রমাণে সুদীপ্তকে কাজে লাগাচ্ছে পুলিশ।
৯। এমনভাবে তদন্ত/চিত্রনাট্য সাজানো হচ্ছে যে, রাজ্য পুলিশ তদন্ত করলে তো কথাই নেই, অন্য যারাই তদন্ত করবেন, একপেশে ধাঁচা থেকে বেরিয়ে প্রকৃত ঘটনায় পৌঁছোন প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে।
(বানান অপরিবর্তিত)