সেই চিতাবাঘ। নিজস্ব চিত্র
গত আট বছর ধরে বারবার পাহাড়ে গেলেও এই প্রথম কার্শিয়াংয়ে রাত কাটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাংলোর পাশের জঙ্গলে দেখা মিলল পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের। মুখ্যমন্ত্রী গত দু’দিন ধরে কার্শিয়াংয়ের গিদ্দাপাহাড়ের সার্কিট হাউসে ছিলেন। ২২ অক্টোবর উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক শেষ করে সন্ধ্যায় তিনি সেখানে পৌঁছন। বৃহস্পতিবার বিকেলে শিলিগুড়ি নেমে আসা অবধি তিনি সেখানেই ছিলেন।
সরকারি সূত্রের খবর, রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্রাম নেওয়ার সময় তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় দায়িত্বে থাকা কয়েক জন অফিসার সার্কিট হাউস লাগোয়া এলাকায় পায়চারি করছিলেন। তখনই তাঁরা জঙ্গলে গাছের ফাঁকে দুটি জ্বলজ্বলে চোখ দেখতে পান। এক নিরাপত্তা অফিসার মোবাইলে ভিডিয়ো করতে গেলে তার আলোয় দেখতে পান চিতাবাঘটিকে। আলো মুখে পড়লে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেটি অবশ্য জঙ্গলে মিলিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা স্পেশ্যাল সিকিউরিটি ইউনিটের (এসএসইউ) অফিসারেরা বন দফতরের অফিসার-কর্মীদের সতর্ক করে দেন। পরের দু’দিন আশপাশের এলাকায় আলো জ্বালিয়ে রাখা হয়। বনকর্মীদের ২৪ ঘণ্টা সার্কিট হাউসের চারপাশে মোতায়েনও করে দেওয়া হয়। যদিও চিতাবাঘটির দেখা আর মেলেনি।
বন দফতরের কার্শিয়াং ডিভিশনের ডিএফও শেখ ফরিদ বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ওই নিরাপত্তা আধিকারিক-সহ কয়েক জন চিতাবাঘটিকে দেখছেন। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল, তাতে অবশ্য চিন্তার কিছু ছিল না।
বন দফতর সূত্রের খবর, কার্শিয়াং সার্কিট হাউস গিদ্দাপাহাড়ে। এলাকার চারদিকে জঙ্গল। পাশেই গিদ্দা চা বাগান এবং ক্যাসেলটন চা বাগানের একটি ডিভিশন। এই এলাকায় মাঝেমধ্যেই চিতাবাঘের দেখা মেলে। মুরগি, কুকুর এবং গবাদি পশুর লোভে লোকালয়ে ঢোকে চিতাবাঘগুলি। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য পুলিশের নিরাপত্তা ছাড়াও বনকর্মীদের বন্যপ্রাণ শাখাকে রাখা হয়েছিল। ঘুমপাড়ানি গুলি, জাল-সহ নানা সরঞ্জাম নিয়ে তাঁরা রাতভর নজরদারি করেছেন।