বসিরহাটে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বাম যুবকর্মীরা। — নিজস্ব চিত্র।
বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের বসিরহাটে পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বাধল। শনিবার বসিরহাট টাউন হল থেকে ডিওয়াইএফআইয়ের মিছিল রওনা দেয় এসপি অফিসের দিকে। পুলিশ বাধা দিলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ।
৫৫ দিন পর সন্দেশখালির সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু সেখানকার আন্দোলনের রাশ যে এখনও হাতছাড়া করতে রাজি নয় বিরোধীরা, শনিবারের বসিরহাট সেই ছবিই দেখাল। বসিরহাট টাউন হল থেকে মিছিল রওনা দেয় এসপি অফিসের উদ্দেশে। মাঝপথেই পুলিশ বাধা দেয়। তার পরেই বাম যুবকর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। পুলিশের ব্যারিকেডের প্রাচীর ভেঙে ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ডিওয়াইএফআই কর্মীরা। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। প্রতিবাদে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন মিনাক্ষীরা।
ক’দিন আগে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ছদ্মবেশে সন্দেশখালি ঢুকে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মিনাক্ষী। কিন্তু পুলিশ টের পেতেই ১৪৪ ধারার কথা বলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। মিনাক্ষীরা তখন প্রশ্ন তোলেন, ১৪৪ ধারা জারি থাকলে তো তা সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হওয়া উচিত। কিন্তু বাম যুবকর্মীদের আটকে দিয়ে কেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা পার্থ ভৌমিক, সুজিত বসুদের সন্দেশখালিতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে? এ নিয়ে সন্দেশখালিতে পুলিশের সঙ্গে একপ্রস্থ বচসার পর মিনাক্ষীরা বসিরহাটে এসপি অফিসেও যান। কিন্তু পুলিশ সুপারের দেখা পাননি তাঁরা। সেই সময় মিনাক্ষী চার দিন সময় দিয়ে বলে গিয়েছিলেন যে, কেন তাঁদের সন্দেশখালিতে আটকানো হল, তা লিখিত ভাবে না জানানো হলে তাঁরা নতুন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করবেন। ডিওয়াইএফআই জানায়, প্রশাসনের তরফ থেকে লিখিত ভাবে এ ব্যাপারে কিছুই আসেনি। তাই শনিবার এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাম যুবকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, সংগঠনের কাজে জলপাইগুড়ির লাটাগুড়িতে ছিলেন মিনাক্ষী। শুক্রবার রাতে সেখান থেকে ট্রেনে রওনা দেন তিনি। ভোরে কলকাতা পৌঁছে সরাসরি বসিরহাট রওনা দেন। পুলিশের বাধা পেয়ে রাস্তায় বসে পড়ে মিনাক্ষী বলেন, ‘‘বসিরহাটের পুলিশ শাহজাহানকে জামাই আদর করে রাখে। মহিলাদের উপর অত্যাচার হলে থানায় বসে থাকে। আর এরা আমাদের আটকাচ্ছে। শাহজাহানকে ভিতরে যেতে হয়েছে। শাহজাহানকে যাঁরা তোল্লাই দিয়েছে, তাঁদেরও যেখানে যাওয়ার সেখানেই যেতে হবে। হিসাব হবে জনতার আদালতে।’’
রাস্তায় বসে প্রতিবাদ করছিলেন মিনাক্ষীরা। কিছু ক্ষণ পর পুলিশের তরফ থেকে তাঁদের পাঁচ জনকে পুলিশ সুপারের কাছে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। জানানো হয়, সর্বাধিক পাঁচ জন গিয়ে পুলিশ সুপারকে ডেপুটেশন জমা দিতে পারবেন।