পঞ্চায়েত ভোটে ভরাডুবি হয়েছিল। গত বছর লোকসভা ভোটে রাজ্যে একটি আসনও তারা পায়নি! কলকাতার পুরভোটে এ বার বাম শরিকদের লড়াই অস্তিত্ব রক্ষার। মরিয়া যুদ্ধে শহরে এ বার প্রমীলা বাহিনীর উপরেই ভরসা রাখছে তিন বাম শরিক।
সামগ্রিক ভাবেই এ বার কলকাতায় ফ্রন্টের মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭৪টিতেই মহিলা মুখ রয়েছে তাদের। তার মধ্যে আবার শরিক সিপিআইয়ের ১৪টি আসনের ১৩টিতেই লড়ছেন প্রমীলা প্রার্থীরা! ফব-র ১১টির মধ্যে মহিলা প্রার্থী ৭ এবং আরএসপি-র ১০-এর মধ্যে ৬। মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ডের বাইরেও নারী মুখ দাঁড় করিয়েছে সব দলই।
বাম শরিক নেতৃত্বের বক্তব্য, নারী নিগ্রহের প্রতিবাদের কথা মানুষের কাছে বেশি বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্যই মহিলাদের প্রার্থী হিসাবে গুরুত্ব দিয়ে নির্দিষ্ট বার্তা দিতে চান তাঁরা। ফব-র যুব নেতা সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘মহিলা মু্খ্যমন্ত্রীর জমানায় মহিলাদের নিরাপত্তার হাল কী, সেটা মহিলারই সব চেয়ে ভাল বলতে পারবেন।’’ তৃণমূলের ‘সন্ত্রাসে’র মোকাবিলায় বিদায়ী কাউন্সিলর এবং ফব প্রার্থী ঝুমা দাস, শামিমা রেহান খানেরা প্রমীলা বাহিনী নিয়ে প্রচারও চালাচ্ছেন। তার বাইরে অতীন ঘোষের মতো তৃণমূলের ‘ওজনদার’ প্রার্থীর বিরুদ্ধেও নবীন মুখ পিয়ালি পালের উপরে ভরসা রেখেছেন ফব নেতৃত্ব। আবার দলের প্রয়াত চিকিৎসক-নেতা সুবোধ দে-র চিকিৎসক কন্যা সুদীপ্তা দাসকেও পুর-ময়দানে নামিয়েছেন।
সিপিআইয়ের বিদায়ী কাউন্সিলরদের চার জনই মহিলা। তার সঙ্গে নতুন মহিলা মুখও যোগ হয়েছে এ বার। সিপিআইয়ের কলকাতা জেলা সম্পাদক প্রবীর দেবের বক্তব্য, ‘‘নারী নির্যাতনের সঙ্গে তৃণমূল সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী লড়াইয়ে নতুন প্রজন্মের মহিলারা যে এগিয়ে আসছেন, এটা ভাল লক্ষণ।’’ আরএসপি নেতা তপন মিত্রও বলেন, ‘‘এমন নয় যে পুরুষ প্রার্থী খুঁজে পেতে সঙ্কট হচ্ছে বলে আমরা মহিলা মুখ দিয়েছি। আমরা সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছি।’’ মহিলা মুখের বাইরে আরএসপি-র হয়ে লড়ছেন কল্যাণ মুখোপাধ্যায়, পুলক মৈত্র, দেবাশিস মজুমদার, তপন বসুর মতো নেতারা।