জলকামানের সামনে। এসএন ব্যানার্জি রোডে ডিওয়াইএফআই-এর কর্মীরা। ছবি: পিটিআই।
ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলির নবান্ন অভিযানে বৃহস্পতিবার পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘণ্টার হরতালের ডাকল বামেরা। আরএসএস মনোভাবাপন্ন রাজনৈতিক দল বা শক্তি বাদ দিয়ে সকলকে এই হরতাল সমর্থনের আহ্বান জানান সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। ইতিমধ্যে বামেদের ডাকা সেই হরতাল সমর্থন করেছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর তরফে এ বিষয়ে বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়েছে। তবে হরতালে জোর করে অবরোধ, দোকানপাট বন্ধ বা গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিন্হা রায়। শহরে সাড়ে তিন হাজার পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাজ্যে নয়া শিল্প স্থাপন, বেকারত্ব বৃদ্ধি-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় ১০টি ছাত্র ও যুব সংগঠন। কলেজ স্ট্রিট থেকে মৌলালি হয়ে এসএন ব্যানার্জি রোড ধরে একটি মিছিল পৌঁছয় ডোরিনা ক্রসিংয়ে। নবান্ন অভিযানে যাওয়ার কথা থাকলেও মিছিল সেখানেই আটকে দেয় পুলিশ। বাধা দিতেই পুলিশের সঙ্গে অভিযানকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। অভিযোগ, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা লাঠি চালায়। আন্দোলনকারীদের যদিও অভিযোগ, বাম কর্মী-সমর্থকদের তাড়া করে পেটায় পুলিশ। বিক্ষোভকারীরাও পাল্টা আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ। গোটা এসএন ব্যানার্জি রোড রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় । একাধিক জায়গায় অশান্তি শুরু হয়। পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ‘সংঘর্ষ’ বেধে যায়। হাতাহাতি, ধস্তাধস্তির পাশাপাশি পুলিশের লাঠি চালানো এবং জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটানো হয়। খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় একাধিক জায়গায়। ঘটনায় আহত হন অনেকে।
পরে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে এক সাংবাদিক বৈঠকে সেলিম বলেন, ‘‘আমরা বামফ্রন্ট এবং সমস্ত সহযোগীর সঙ্গে কথা বলেছি, শুক্রবার ১২ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘট ও হরতাল পালন করা হবে। ওরা মিছিলের গতিপথ স্তব্ধ করতে চেয়েছে। শুক্রবার এ রাজ্যের মানুষ রাজ্যকে স্তব্ধ করবে।’’ বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এক বিবৃতি জারি করে বৃহস্পতিবারের ঘটনার সঙ্গে জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনার তুলনা করেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘নবান্ন অভিযানে গিয়ে পুলিশের অত্যাচারে বাম সংগঠনগুলির প্রায় ১৫০ ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছেন।’’ পাশাপাশি এর আগে মাদ্রাসা শিক্ষক, পার্শ্বশিক্ষক, মহিলাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের উপরেও পুলিশি অত্যাচারের কথা তুলে ধরেন বিমান।
পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানান, তাঁরা এই হরতাল সমর্থন করছেন। এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস বামেদের ডাকা ১২ ঘণ্টার হরতালকে পূর্ণ সমর্থন করছে। এই ধর্মঘটকে সফল করার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি।