উপনির্বাচন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা নেই। তাই ফলাফল নিয়ে বেশি মাথা না ঘামিয়ে তৃণমূল স্তরে সংগঠনকে একটি গুছিয়ে নেওয়ার উপরেই জোর দিতে চাইছেন সিপিএম নেতৃত্ব। বিধানসভা ভোটে বারবার বলেও সর্বত্র বুথে কর্মী রাখা যায়নি। উপনির্বাচনে অন্তত সেইটুকু করে দেখানোর কথা জেলায় সংগঠনকে মাথায় রাখতে বলছে আলিমুদ্দিন।
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন উপলক্ষে সোমবার নিমতৌড়িতে সাধারণ সভায় বুথ স্তরে সংগঠনে নজর দেওয়ার কথা বলেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। ওই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা এলাকার বাম কর্মীদের উপস্থিতিতে নির্বাচনী সাধারণ সভায় সূর্যবাবু বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, তৃণমূলের শাসন বা তাদের রাজনীতির অবসান ঘটানোর ক্ষেত্র তো উপনির্বাচন নয়। তাই সেই ভাবেই এই লড়াইকে দেখতে হবে। বিধানসভা ভোটে কত আসন পাওয়ার কথা তাঁরা বলেছিলেন, বাস্তবে কত পেয়েছিলেন, সে সব ‘ভুল’ মাথায় না রেখে উপনির্বাচনকে দেখতে হবে এখনকার প্রেক্ষাপটেই।
আনকোরা মহিলা মুখ মন্দিরা পণ্ডাকে প্রার্থী করে তমলুকে অধিকারী-রাজের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে সিপিএম। উপনির্বাচনকে উপলক্ষ করে সংগঠনকে গুছিয়ে নেওয়াই যে তাঁদের অন্যতম লক্ষ্য, সাধারণ সভায় সূর্যবাবুর বক্তব্যেই তার ইঙ্গিত মিলেছে বলে দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা। সূর্যবাবুর নির্দেশ, ফল নিয়ে বেশি ভাবিত না হয়ে বুথে বুথে লোক রাখার উপরেই জোর দিতে হবে বেশি। তাতে বরং সংগঠনের দীর্ঘমেয়াদি উপকার হবে। তবে বিধানসভা ভোটে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি বিধানসভা আসনে জিতেছিল বামেরা। আরও দু’টি আসনে তৃণমূল জয় পেয়েছিল অল্প ব্যবধানে। এই ফল নিয়ে তৃণমূল শিবিরেও ঈষৎ উদ্বেগ আছে। সে সব মাথায় রেখেই তৃণমূল স্তরে সংগঠন গোছানোর চেষ্টা করছেন বাম নেতৃত্ব।
কোচবিহারে ভাঙনের কবলে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের সংগঠনও। ৭টি বিধানসভা এলাকা ধরে কেন্দ্রীয় কর্মিসভায় জেলার বাম নেতৃত্বও একই ভাবে দল ভাঙানোর রাজনীতির বিরুদ্ধে পাড়ায় পাড়ায় প্রচার করার কথা বলেছেন। এর পরে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ও সূর্যবাবুও যাবেন কোচবিহার। কলকাতায় (এ বার আলিমুদ্দিনের বদলে প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে) আগামী বৃহস্পতিবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে উপনির্বাচন সংক্রান্ত কৌশল ও আরও কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়ার কথা।