হেরো বামের ডাকেও ভিড় নারদ-মন্ত্রেই

সদ্য দক্ষিণ কাঁথির উপনির্বাচনে মর্যাদা হারিয়ে তৃতীয় স্থান জুটেছে! কিন্তু মিছিলের বহর দেখে অন্তত তা মালুম হওয়ার উপায় নেই!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩০
Share:

আন্দোলন: নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল বামেদের। মঙ্গলবার ধর্মতলায়। —নিজস্ব চিত্র।

সদ্য দক্ষিণ কাঁথির উপনির্বাচনে মর্যাদা হারিয়ে তৃতীয় স্থান জুটেছে! কিন্তু মিছিলের বহর দেখে অন্তত তা মালুম হওয়ার উপায় নেই! নারদ-কাণ্ডে এফআইআরে নাম থাকা শাসক দলের এক ডজন নেতা-মন্ত্রীর গ্রেফতার ও পদত্যাগের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার নোটিসে কলকাতায় ফের বডসড় মিছিল করে দেখাল বামফ্রন্ট। সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, মহম্মদ সেলিমের মতো রাজ্য সিপিএমের শীর্ষ নেতারা সকলেই এখন দিল্লিতে। তাঁদের ছাড়াই মঙ্গলবার কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের ডাকে রাজপথে মিছিলের বহর দেখে পথচলতি জনতার বিস্ময়

Advertisement

শোনা গেল, ‘‘এখনও সিপিএমের এত লোক আছে?’’

সম্ভবত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই জটিল, লম্বা কথায় রাস্তা ভারাক্রান্ত করেননি বাম নেতারা। ধর্মতলা থেকে এন্টালি মার্কেট পর্যন্ত মিছিলের মূল স্লোগান ছিল সহজ— ‘চোর ধরো, জেল ভরো’! সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেব, অসীম দাশগুপ্তদের পাশাপাশিই মিছিলে ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায়, আরএসপি-র অশোক ঘোষ, সিপিআইয়ের মঞ্জুকুমার মজুমদার, প্রবীর দেবেরা।

Advertisement

মিছিলের আগে বাম পরিষদীয় নেতা সুজনবাবু দাবি করেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে এফআইআর দায়ের হওয়ার পরেও অভিযুক্তদের আড়াল করতে চাইছেন, তাতে সিবিআই এর পরে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটেও ধাওয়া করবে। যদি তারা না-ও করে, মানুষ ধাওয়া করবে!’’ সিবিআইয়ের এফআইআরে অভিযুক্ত না হলেও তৃণমূল যুব সভাপতির নাম যে উল্লেখ আছে, তা-ও দেখিয়েছেন তিনি।

একই দিনে রাণি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে মিছিল করে রাজভবনে দাবিপত্র জমা দিয়েছে রাজ্য বিজেপি-র বিদ্বজ্জন শাখা। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, চিন্তার কিছু নেই। আসলে ওঁরা নিশ্চিন্তে ভুবনেশ্বরের জেলে থাকতে পারবেন! তার জন্যই ভুবনেশ্বর দেখতে গিয়েছেন উনি!’’

একই সুরে কটাক্ষ করেছেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সেলিমও। দিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের ফাঁকে এ দিন তাঁর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলকে তো জেলের মধ্যে দলীয় সম্মেলন ডাকতে হবে! সেই জন্যই সুদীপের কাছে যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। সম্ভবত জানতে যাচ্ছেন, ওঁর নামটা বলে দিয়েছেন কি না!’’ সূর্যবাবুর কাছে প্রশ্ন ছিল, উদ্বিগ্ন তৃণমূলের জন্য চিকিৎসক হিসাবে তাঁর কোনও পরামর্শ আছে কি না? সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের জবাব, ‘‘চিকিৎসক হিসাবে পরামর্শ দিতে চাই না। আমাদের দাবি, সিবিআইয়ের হেফাজতে নিয়ে
অভিযুক্তদের জেরা করতে হবে। নরেন্দ্র মোদী চওড়া ছাতির কথা বলেন, সেই সাহস দেখাতে হবে!’’ আর বিমানবাবুর ‘পরামর্শ’— ‘‘দু’জন শুনলাম কান্নাকাটি করছেন। ওঁরা গান শুনতে পারেন! গান শুনলে মন ভাল থাকে!’’

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি অবশ্য প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ তাঁরা দাবি করছেন না। তাঁদের দাবি, অভিযুক্ত নেতা-মন্ত্রীদের পদ থেকে সরানো হোক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement