সিএএ এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে বুধবার সিপিআইয়ের বিক্ষোভ সভা। —নিজস্ব চিত্র।
নয়া নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) প্রতিবাদে তৃণমূল এবং বাম ও কংগ্রেসের একত্রে না-আসা নিয়ে এমনিতেই প্রশ্ন উঠছে। তার উপরে এ বার মিছিল ঘিরে সংঘাতের নতুন উপসর্গ দেখা দিল শাসক ও বিরোধী শিবিরে!
মুখ্যমন্ত্রী ও শাসক দলের কর্মসূচি থাকছে রাস্তায়। তাই নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-র প্রতিবাদে অন্যান্য বিরোধী দলের কাউকে মিছিল না করার, কাউকে রাস্তা বদলানোর কথা বলল পুলিশ। প্রশাসনের এমন ‘বৈষম্যমূলক’ আচরণের বিরুদ্ধে এক সুরে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বাম ও কংগ্রেস অবশ্য জানিয়ে দিল, পূর্ব ঘোষণা মতোই আজ, বৃহস্পতিবার তারা রাস্তায় নেমে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের কার্যকলাপের প্রতিবাদ করবে।
স্বাধীনতা সংগ্রামী রামপ্রসাদ বিসমিল ও আসফাকউল্লা খানের ‘আত্মবলিদান দিবসে’ আজ দেশ জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা আগেই করেছিল পাঁচ বাম দল ও নানা সংগঠন। সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবেই আজ মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে এজেসি বোস রোড হয়ে মল্লিকবাজার ঘুরে পার্ক সার্কাস ময়দান পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছে বামেরা। ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে বিক্ষোভ-সভা আছে এনআরসি-বিরোধী যুক্ত মঞ্চের। আর প্রদেশ কংগ্রেস মিছিল করবে টিপু সুলতান মসজিদ থেকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে রামমন্দির পর্যন্ত। কিন্তু তিন দিন মিছিলের পরে আজ রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার জেরেই কংগ্রেস ও যুক্ত মঞ্চের কর্মসূচির অনুমতি বাতিল করেছে পুলিশ। আর বামেদের বলা হয়েছে, সিআইটি রোড ধরে পার্ক সার্কাস যেতে।
আরও পড়ুন: আগুন জ্বালাচ্ছেন অমিত শাহ, অভিযোগ মমতার
পুলিশের কথা অগ্রাহ্য করেই তিন কর্মসূচি আজ বহাল থাকছে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, শুধু তিনিই প্রতিবাদ করবেন। আর কেউ কিছু করবে না! নির্ধারিত রাস্তাতেই আমাদের মিছিল হবে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘অনুমতি ছাড়াই ভিক্টোরিয়া হাউসের উল্টো দিকে জড়ো হয়ে আমরা মিছিল শুরু করব। সরকারকে এ হেন বৈষম্যের জন্য মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’’ যুক্ত মঞ্চের প্রসেনজিৎ বসুর অভিযোগ, ‘‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে মুখ্যমন্ত্রী নাগরিক আন্দোলনকে সঙ্কীর্ণ দলীয় স্বার্থে রুখতে চাইছেন!’’ সিপিআইয়ের কলকাতা জেলা পরিষদ এ দিনই বৌবাজারে বিক্ষোভ-সভা করেছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, তাঁদের দল কারও কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে না।