—নিজস্ব চিত্র।
শুধু উপনির্বাচনে আসন সমঝোতাই নয়। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যে আন্দোলনের রাস্তায় যেতে চাইছে বাম ও কংগ্রেস। দু’পক্ষের যৌথ কর্মসূচির প্রথম বড় উদাহরণ হিসেবে সামনে আসতে চলেছে চিত্তরঞ্জন থেকে রাজভবন পর্যন্ত ‘লং মার্চ’।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাঁচানোর দাবি-সহ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের আর্থিক নীতি সম্পর্কিত নানা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে চিত্তরঞ্জন লোকোমাটিভের গেট থেকে ২৮৩ কিলোমিটার পথ হাঁটার কর্মসূচির উদ্যোক্তা সিটু এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন। তার মধ্যে আইএনটিইউসি-ও আছে। কিন্তু বাম ও কংগ্রেস জোটকে রাস্তায় নামানোর লক্ষ্যে দু’পক্ষের শীর্ষ নেতৃত্বই ওই পদযাত্রায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বামফ্রন্টের সব গণসংগঠনকে ওই কর্মসূচিতে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বামেদের অনুরোধে প্রদেশ কংগ্রেসও তাদের সব শাখা সংগঠনকে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে পথে নামতে বলেছে।
চিত্তরঞ্জন থেকে আগামী ৩০ নভেম্বর শুরু হয়ে পদযাত্রা কলকাতা পৌঁছবে ১১ ডিসেম্বর। আর উত্তরবঙ্গের কোচবিহার থেকে শুরু হয়ে শিলিগুড়িতে মিছিল আসবে ১০ ডিসেম্বর। বামফ্রন্ট ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের আলোচনায় ঠিক হয়েছে, ভোটের মোড়কের বাইরেও জোটের বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সব সংগঠনকে নিয়ে তাঁরা শ্রমিক ফ্রন্টের ওই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। তার আগেই অবশ্য উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়ে যাবে। বাম ও কংগ্রেস নেতাদের পরিকল্পনা, উপনির্বাচনের ফলই যে শেষ কথা নয়, সেই বার্তা স্পষ্ট করে দেওয়া। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের সুরেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, আসন সমঝোতার পাশাপাশি গণ-আন্দোলনে তাঁরা এখন একসঙ্গেই চলবেন।
আরও পড়ুন: কার্তিকে শীতের দেখা নেই, সপ্তাহান্তে রাজ্যে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’
কিছু দিনের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার কথা। রায় বেরোনোর পরে পরিস্থিতি বুঝে কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে বাম ও কংগ্রেস নিজেদের পতাকা নিয়ে দ্রুত পথে নামবে, সেই আলোচনাও জোট শিবিরে হয়ে রয়েছে। আর এ সবের মধ্যেই তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনে যৌথ প্রচারের মঞ্চ তৈরি। প্রচারের মঞ্চ ভাগ করতে যে আড়ষ্টতা গত বিধানসভা নির্বাচনে ছিল, এ বার তা ঝেড়ে ফেলছেন দু’দলের নেতারা। তিন আসনে প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা করতেও দু’পক্ষের নেতারা একসঙ্গে গিয়েছেন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয় করেই আমাদের জেলা নেতৃত্ব প্রচার কর্মসূচি ঠিক করছেন।’’ উপনির্বাচন হলেও দু’পক্ষের রাজ্য নেতৃত্ব প্রচারে যাবেন বলে ঠিক হয়েছে।