প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
করোনা পরিস্থিতিতে অন্তত তিন বার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘মন কি বাত’ হয়েছে বেশ কয়েক বার। কিন্তু বিপন্ন মানুষের সমস্যা সমাধানে প্রকৃত পদক্ষেপ কবে দেখা যাবে, সেই প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিল বাম ও কংগ্রেস। রাজ্য বিজেপি অবশ্য করোনা মোকাবিলা ও রেশন বিলি ঘিরে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে ঘরে বসে প্রতিবাদ জানাল। কেন্দ্রীয় শাসক দলের সেই কর্মসূচিকে আবার একই সুরে কটাক্ষ করল তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেস!
প্রধানমন্ত্রীকে রবিবার চিঠি পাঠিয়েছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। বাংলা থেকে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নানা কথা বলে চলেছেন। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে প্রায় ১৩ কোটি মানুষ রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন। তাঁদের তিন মাসের বেতন বা মজুরি সুরক্ষিত থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না। সাধারণ মানুষ সহৃদয় হয়ে যাঁদের সহায়তা করছেন, তাঁরা পাচ্ছেন। কেন্দ্রের কোনও দায়িত্ব নেই?’’ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন তুলেছেন, ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিলে যে বিপুল টাকা উঠছে, তা সুনির্দিষ্ট ভাবে করোনা মোকাবিলার জন্য। সেই টাকা থেকে রাজ্যগুলিকে সাহায্য করা হচ্ছে না কেন?
‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা’র চাল-গম বাংলায় মানুষের কাছে না পৌঁছনো-সহ বেশ কিছু অভিযোগ জানিয়েছেন মান্নান, সুজনও। তাঁদের অভিযোগ, সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে ৬৫%-এর কাছে সরকারি কোনও সহায়তা পৌঁছয়নি। একই সুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, ‘‘করোনা-যুদ্ধে সামনের সারিতে থেকে লড়ছে রাজ্যগুলি। অথচ তাদের জন্য কেন্দ্রের পর্যাপ্ত অর্থ সাহায্য, সরঞ্জাম কিছুই আসছে না।’’ বহু ক্ষেত্রে শ্রমিকদের বেতন না পাওয়ার প্রসঙ্গ তুলেছেন সোমেনবাবু। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ সত্ত্বেও অনেক সংস্থা যে লকডাউনের সময়ে শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছে না, তা জানিয়ে এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন ইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ।
আরও পড়ুন: পড়ে থাকে জন্মদিনের পায়েস, হস্টেল আগলে রেখে মুড়ি-কর্নফ্লেকসে রাত কাটে ডাক্তারের
বিজেপির নেতা-কর্মীরা এ দিন বাড়িতে বা বাড়ির সামনে দু’ঘণ্টার মৌনী অবস্থানে বসেছিলেন। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে গোলমাল, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়া, রেশন দুর্নীতি, আমাদের নেতা-সাংসদদের ত্রাণের কাজে যেতে না দেওয়ার প্রতিবাদে আমরা এই মৌনী অবস্থান করেছি।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, দলের কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেননেরাও কলকাতার বাইরে এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হয়েছিলেন।
তৃণমূল নেতা ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার কাজ করছে। আমরা রাস্তায় আছি। ওঁরা বাড়িতে বসে সমালোচনা করছেন!’’ বাম নেতা সুজনবাবুরও মন্তব্য, ‘‘ওঁরা তো কেন্দ্রের শাসক দল! কেন্দ্রীয় সরকার যে দায়িত্ব পালন করছে না, সেটার কী হল?’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)