—ফাইল চিত্র।
আব্বাস সিদ্দিকির দল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টকে (আইএসএফ) ৩৫ থেকে ৪০টি আসন ছেড়ে জোট-প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে চাইছে সিপিএম ও কংগ্রেস। তার মধ্যে প্রায় ২৫টি আসন আব্বাসদের জন্য বরাদ্দ করে ফেলেছে সিপিএম। কংগ্রেসের সঙ্গে আইএসএফের কথাবার্তা চলছে আরও কিছু আসনের ব্যাপারে। সব ঠিকমতো চললে আগামী সপ্তাহের গোড়ায় ত্রিপাক্ষিক জোটের চূড়ান্ত ঘোষণা হয়ে যাবে।
কংগ্রেস নেতারা আলোচনা সেরে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত আইএসএফের চেয়ারম্যান নৌসাদ সিদ্দিকির সঙ্গে বৈঠক চালিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ও সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। বাম সূত্রের খবর, রাতের ওই বৈঠকেই প্রায় ২২টি আসন আইএসএফ-কে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সিপিএমের তরফে। আরও কয়েকটি আসন নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চালাচ্ছে আলিমুদ্দিন। যে কারণে নৌসাদ বলেছেন, ‘‘বামেদের সঙ্গে ৮০% সমঝোতা হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা হবে। আমরা তালিকা দিয়েছি, ওঁরা কথা বলে জানাবেন। আমরা জানি ১০০%ই হবে না। কিন্তু ৩০% হলেই বা কী করে হবে! কংগ্রেসের উত্তরের উপরে বাকিটা নির্ভর করছে।’’
সিপিএম আব্বাসের সঙ্গে আসন-রফার বিষয়ে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে দেখেই বৃহস্পতিবার তৎপরতা বেড়েছে কংগ্রেস শিবিরে। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে নৌসাদের। কোন কোন আসন কংগ্রেসের পক্ষে ছাড়া সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা এগিয়েছে। তার আগে এ দিন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বামেদের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সমাবেশ-মঞ্চে বিমানবাবু ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও মান্নান। কংগ্রেস নেতাদের বিমানবাবুরা অনুরোধ করেন, চূড়ান্ত আসন-রফার বিষয়ে দ্রুত ফয়সালা দরকার। তার পরেই বিধান ভবনে আলোচনায় বসেন অধীরবাবু, মান্নান ও দলীয় সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। সেখানে ঠিক হয়, আইএসএফ কংগ্রেসের গত বারের জেতা যে আসন চেয়েছে, সেই দাবি না মেনেও রফা-সূত্র বার করা হবে।
তবে কংগ্রেস নিজেদের কাজ নিজেই কিছুটা কঠিন করে তুলেছে উত্তর দিনাজপুর, মালদহ ও মুর্শিদাবাদে কোনও আসন আব্বাসদের দিতে না চেয়ে। তার জেরে দক্ষিণবঙ্গেই বেশি আসন দাবি করছে আইএসএফ। সূত্রের খবর, সেই তালিকায় কলকাতা বন্দর ও বালিগঞ্জ আসনও আছে। মেটিয়াবুরুজ আসনটি আইএসএফ-কে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছে সিপিএম। ফলে, বন্দর পেলে ওই গোটা এলাকায় নজর দিতে পারবেন আব্বাসেরা। আইএসএফ নেতৃত্বের বক্তব্য, তাঁরা প্রথমে যত আসনের দাবি তুলেছিলেন, তার চেয়ে তাঁরা অনেক ‘নমনীয়’ হয়েছেন। কংগ্রেসকেও ‘যুক্তিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি’ নিয়ে বিষয়টা দেখতে হবে। আর প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার মতে, ‘‘আসনের দাবি যা আছে, তাতে কিছু অদল-বদল করে দ্রুতই চূড়ান্ত রফা হয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’’
এমতাবস্থায় আজ, শুক্রবার আলিমুদ্দিনে বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে। কংগ্রেস, আইএসএফ এবং আরও কিছু ছোট দলের জন্য বাম শরিকদের কোথায় কত আসন ছাড়তে হবে, সেই অঙ্কের আজই নিষ্পত্তি করে ফেলতে চান বিমানবাবুরা।