রাজনৈতিক অশান্তি রুখতে বুধবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল সিউড়ির হুসনাবাদে। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি করতে গিয়ে প্রাণ হারাতে হয়েছে পরিবারের এক সদস্যকে। কিন্তু তারপরও পরিবারের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি দলের নেতাকর্মীদের, এমনই আক্ষেপ প্রকাশ করলেন ভোট-পরবর্তী হিংসায় নিহত, ইলামবাজারের বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারের পরিবার।
দু’দিনের সফরে রাজ্যে এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। বিজেপি সূত্রে খবর, ইলামবাজারের গোপালনগরে নিহত গৌরবের পরিবারের সঙ্গে বুধবার তাঁর দেখা করতে যাওয়ার কথাও ছিল। কিন্তু তাও কার্যত এদিন বাতিল হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের পাশে না পাওয়ায় এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবার। মৃতের ভাই সেতু সরকার বলেন, “সেই অর্থে আমরা কাউকেই পাশে পাইনি। এই পরিস্থিতিতে আমরা এখন কী করব ভেবে উঠতে পারছি না।’’
ভোটের আগে থেকেই রাজনৈতিক হিংসা অব্যাহত ছিল ইলামবাজারে। ভোটের আগের দিন রাতে ও ভোটের দিন দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াতে থাকে ইলামবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকায়। এরপর ভোট মিটে গেলেও রাজনৈতিক সংঘর্ষ চলছিল ওই এলাকায়। রবিবার গণনা চলাকালীন ইলামবাজারের গোপালনগর গ্রামে এক বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে।
রবিবার বেলা গড়াতে তৃণমূল সরকার গড়ার প্রয়োজনীয় আসন সংখ্যা পেরিয়ে যেতেই বিভিন্ন জায়গায় পাশাপাশি ইলামবাজারের গোপালনগরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা বিজয় উল্লাসে মাতেন। বিজেপির অভিযোগ, সেই সময় ওই এলাকায় থাকা বিজেপি সমর্থক গৌরাঙ্গ সরকারের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। তাঁর দুই ছেলে গৌরব ও সেতু সরকার বাধা দিতে গেলে তাদের বাঁশ, লাঠি, রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বিজেপি সমর্থক গৌরব সরকারের। গুরুতর আহত অবস্থায় সেতু সরকারকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গৌরবের মৃত্যুর তিন দিন কেটে গেলেও নিহত পরিবারের পাশে তেমনভাবে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব থেকে শুরু করে প্রার্থী কাউকেই পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি বলে তাঁর পরিজনের অভিযোগ। এতে নিচু তলার কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভও তৈরি হতে শুরু করেছে। প্রকাশ্যে নাম না করলেও অনেকে বলছেন, “যে প্রার্থীর জন্য আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করলাম, আমাদের বিপদে তিনিই আজ আমাদের পাশে থাকলেন না।”
বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “আমাদের দল ওই পরিবারের পাশেই আছে। বৃহস্পতিবার রাজ্য নেতৃত্বের একটি দলের নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে।”