জীবনকৃষ্ণ সাহার মোবাইল ছোড়ার ঘটনায় নতুন জট পাকল আদালতে। ফাইল চিত্র।
বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার মোবাইল পুকুরে ছোড়ার মামলায় নতুন মোড়। জীবনের আইনজীবী এ বার সম্পূর্ণ উল্টো দাবি করলেন। তাঁর দাবি, জীবনকে ফাঁসানো হয়েছে। পুরোটাই সিবিআইয়ের ‘সাজানো ঘটনা’। আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের কাছে জীবনের আইনজীবী জানান, সে দিন বিধায়ক আদৌ মোবাইল পুকুরে ছুড়ে ফেলেননি।
জীবনের মামলায় এর আগে তাঁর আইনজীবী আদালতে জানিয়েছিলেন, জীবনই মোবাইল দু’টি ছুড়েছিলেন। কিন্তু তিনি রাগের মাথায় এই কাজ করেন। বৃহস্পতিবার আইনজীবীর বয়ান প্রায় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছে। জীবনের মামলায় কেন এই ডিগবাজি, তা স্পষ্ট নয়।
বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে জীবনের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী। তিনি বিচারকের উদ্দেশে জানান, জীবন প্রসঙ্গে একটি বাক্যও সিবিআইয়ের চার্জশিট বা এফআইআরে নেই। তা সত্ত্বেও এপ্রিল মাসে সরাসরি বিধায়কের বাড়িতে হানা দেন গোয়েন্দারা। জীবনের মোবাইল তাঁরা বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছিলেন। ফলে পুরো ঘটনাই আসলে ‘সাজানো’।
সিবিআই মোবাইল নিয়ে নিলে জীবন মোবাইল থেকে কয়েকটি দরকারি ফোন নম্বর টুকে নেওয়ার জন্য আবেদনও জানিয়েছিলেন বলে দাবি করেন তাঁর আইনজীবী। তাঁর যুক্তি, মোবাইল ফোন নিয়ে কোনও অফিসারের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর থেকেই বোঝা যায়, মোবাইল পুকুরে ছোড়ার ঘটনাটি সাজানো।
জীবনের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অভিযোগ, তিনি বিধায়ক হিসাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব খাটিয়ে থাকেন। তাঁর আইনজীবীর পাল্টা প্রশ্ন, সারা দেশে অনেক বিধায়ক রয়েছেন, তাঁরা সকলেই কি প্রভাবশালী? জীবনের সঙ্গে এসএসসি-তে নিয়োগ দুর্নীতির কোনও সম্পর্কই নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। তিনি বিধায়কের জামিনের আবেদনও করেছেন আদালতে।
জীবনের আইনজীবীর দাবি শুনে সিবিআইয়ের তরফে পাল্টা প্রশ্ন তোলা হয়, গোয়েন্দারা যদি ফোন আগেই বাজেয়াপ্ত করে নেন, তা হলে তা ছুড়ে ফেলার দরকার হবে কেন? কেনই বা সিবিআই তাদের হাতে আসা তথ্য জলে ফেলে নষ্ট করতে চাইবে?
আদালতের বাইরে বেরিয়ে জীবনের আইনজীবী সাংবাদিকদের জানান, তাঁর মক্কেল আদৌ পুকুরে কোনও মোবাইল ছোড়েননি। তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। জীবনকে মোবাইল ছোড়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি তেমন কিছুই বলতে চাননি। দু’টি মাত্র শব্দ খরচ করেছেন বিধায়ক। শুধুই বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে।’’