সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি স্বীকৃতি সংক্রান্ত একগুচ্ছ আবেদনের মামলার রায় সংরক্ষিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি স্বীকৃতি সংক্রান্ত একগুচ্ছ আবেদনের মামলায় রায় সংরক্ষিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার শুনানি পর্বের শেষে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এ কথা জানিয়েছে। টানা ১০ দিন শুনানির পরে বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, কেন্দ্রের পাশাপাশি, এ বিষয়ে ৭টি রাজ্যের সরকার তাদের মতামত জানিয়েছে। কেন্দ্রের সঙ্গে, অসম, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং রাজস্থান সরকার সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি বৈধতার দাবির বিরোধিতা করেছে।
কেন্দ্রের তরফে সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি স্বীকৃতির বিরোধিতা করে জানানো হয়, এটা নেহাতই ‘শহুরে অভিজাত সমাজের ভাবনা’। পাশাপাশি, এমন ‘স্পর্শকাতর বিষয়ে’ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার সংসদের হাতে তুলে দেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বুধবার এই মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছিল, ‘‘সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের কোনও রায় সঠিক পদক্ষেপ হবে না।’’
সাংবিধানিক বেঞ্চের বিচারপতি এসআর ভট্ট বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের ওই অবস্থানের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘সাংবিধানিক বেঞ্চে এ সংক্রান্ত মামলায় ‘রিট’ আকারে রায়দান করে। যা মেনে নিতে হবে। এই ব্যবস্থাতেই আমরা চলছি। রাষ্ট্রের সীমারেখা থাকা উচিত।’’
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় গোড়া থেকেই কেন্দ্রের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। কখনও বলেছেন, ‘‘সমকামিতা যে কেবল শহুরে বিষয়, এমন কোনও পরিসংখ্যান নেই সরকারের কাছে।’’ কখনও বলেছেন, ‘‘সমকামী সম্পর্কগুলি কেবল শারীরিক নয়, মানসিক, স্থিতিশীল সম্পর্কও।’’ আবার কখনও তাঁর মন্তব্য, ‘‘নারী-পুরুষের সংজ্ঞা শুধু মাত্র জননাঙ্গের উপর নির্ভর করে না।’’ এমনকি, সমলিঙ্গে বিয়ে আইনি স্বীকৃতি না পেলে সমকামী দম্পতির সামাজিক পরিচয় কী হবে?
২০১৮-র ৬ সেপ্টেম্বর, ভারতীয় সংবিধান থেকে ৩৭৭ ধারাকে সংশোধন করে সমকামিতাকে যে ‘অপরাধ’-এর তকমা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, সে কথাও কেন্দ্রকে মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। সেই সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘যদি সমকামিতা অপরাধ না হয়, তা হলে দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক সমলিঙ্গের মানুষের বিয়ের মতো স্থিতিশীল বন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধা কোথায়?’’