প্রতীকী ছবি।
নতুন সভাপতি দায়িত্ব নেওয়ার ১৫ দিন পেরোতে না পেরোতেই ফের একই সঙ্কট কংগ্রেসে! বামেদের সঙ্গে জোটের আলোচনা এখনও থমকে তো বটেই। এমনকি, দলীয় কর্মসূচি ঘোষণার ‘মালিকানা’ কার, সেই প্রশ্নেও টানাপড়েন বেধে যাচ্ছে। একই দিনে কংগ্রেসের দুই নেতার দুই সাংবাদিক সম্মেলন করতে চলেছেন খবর পেয়ে এআইসিসি-র হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত দুই কর্মসূচিই বাতিল হল!
কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি বিলের প্রতিবাদে সারা দেশেই প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়েছে কংগ্রেস। তার অঙ্গ হিসেবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর কলকাতাতেও বিক্ষোভ মিছিল এবং রাজভবনে প্রতিবাদ জানাতে যাওয়ার কথা। এআইসিসি-র প্রতিনিধিরা রাজ্যে রাজ্যে গিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে পাশে নিয়ে ওই কর্মসূচি ঘোষণা করবেন, এমনই ঠিক হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী যে হেতু দিল্লিতে, এআইসিসি-র কাছ থেকে সঙ্কেত পেয়ে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান তৈরি হয়েছিলেন ওই সাংবাদিক সম্মেলনের জন্য। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে বুধবার হঠাৎই ঘোষণা করা হয়, বিধান ভবনে আজ, বৃহস্পতিবার কৃষি বিল সংক্রান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বিধায়ক নেপাল মাহাতো। প্রেস ক্লাবে আজ আবার কাছাকাছি সময়ে মান্নানের অন্য একটি সাংবাদিক সম্মেলন ঠিক হয়েছিল। এআইসিসি-র প্রতিনিধি যাওয়ার আগেই নেপালবাবু কেন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন এবং দু’টো সাংবাদিক সম্মেলনই বা কেন হবে, এ সব বিভ্রান্তিতে সন্ধ্যায় দুই কর্মসূচিই বাতিল হয়েছে দিল্লির নির্দেশে।
এআইসিসি নেতা মোহন প্রকাশের কলকাতায় আসার কথা কাল, শুক্রবার। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ঠিক হয়েছে, তখনই মোহনের সঙ্গে কর্মসূচি ঘোষণায় উপস্থিত থাকবেন প্রদেশ নেতৃত্বের কেউ। আর সে দিন বিকালে কৃষি বিলের বিরোধিতায় সিটু-সহ নানা শ্রমিক সংগঠনের ডাকা ধর্মতলা থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হবে আইএনটিইউসি এবং যুব কংগ্রেস। বাম নেতা বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তীদের সঙ্গেই মিছিলের পিছনে থাকবেন মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্যেরা। বস্তুত, কালকের এই কর্মসূচিই আজ প্রেস ক্লাব থেকে ঘোষণার কথা ছিল মান্নানের। কংগ্রেসের অভ্যন্তরীন সমন্বয়ের অভাবে যা শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়েছে!
অধীরবাবুকে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য সওয়াল করে সনিয়া গাঁধীকে চিঠি দিয়েছিলেন মান্নানই। সনিয়া উত্তরে লিখেছিলেন, মান্নানের যুক্তি তিনি মাথায় রাখছেন। কিন্তু এখন প্রদেশ কংগ্রেসের চাল-চলন দেখে মান্নান খানিকটা হতভম্ব হয়ে গিয়েছেন! প্রস্ন করা হলে তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রদেশ সভাপতি সংসদে ব্যস্ত বলে দিল্লি থেকে আমাকে বলা হয়েছিল কৃষি বিলের প্রতিবাদ সংক্রান্ত ঘোষণায় উপস্থিত থাকতে। প্রদেশ সভাপতি এবং পরিষদীয় নেতার উদ্দেশেই এআইসিসি-র নানা নির্দেশিকা আসে। এখানে প্রদেশ কংগ্রেস যে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিচ্ছে, আমার জানা ছিল না!’’ অন্য দিকে দিল্লি থেকে অধীরবাবু বলছেন, ‘‘কিছু সমস্যা হয়তো আছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কলকাতা গিয়ে বিষয়টা দেখার চেষ্টা করব। তবে আশা করব, দলের নির্দেশের বাইরে কেউই চলবেন না।’’