মঞ্চে কুণাল ঘোষের ডান পাশে শেখ সুফিয়ান। নিজস্ব চিত্র।
জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, নন্দীগ্রামের পুরনো নেতা শেখ সুফিয়ানকে তিনি স্নেহ করেন। এ বার ‘অভিমানী’ সুফিয়ানের মান ভাঙাতে একেবারে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে গেলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের অন্দরের বিরোধ মেটানোর চেষ্টা হল নন্দীগ্রামের মাটিতে।
গত বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী মমতার এজেন্ট ছিলেন সুফিয়ান। মমতার হারের পরে সুফিয়ানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল দলেই। তারপর নতুন ব্লক কমিটিতে সুফিয়ান গোষ্ঠীর লোকজন জায়গা না পাওয়ায় নন্দীগ্রামে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল তৃণমূলের অন্দরে। বিক্ষুব্ধদের নেতৃত্বে ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি সুফিয়ানই। দলীয় কর্মসূচিতে সে ভাবে থাকছিলেন না তিনি। তবে ক’দিন আগে খড়্গপুরে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। মমতা তাঁর সঙ্গে আলাদা ভাবে কথাও বলেছিলেন। নন্দীগ্রামে হারের পরে কেন পুনর্গণনা চাননি সুফিয়ান সে প্রশ্ন নেত্রী করেছিলেন সরাসরিই। তারপর অবশ্য এ-ও জানিয়েছিলেন, সুফিয়ানকে তিনি স্নেহ করেন।
রবিবার অবশ্য নন্দীগ্রামে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে গোড়ায় গরহাজির ছিলেন সুফিয়ান। সেই খবর পৌঁছয় এ দিনের সভার বিশেষ অতিথি কুণালের কাছে। এরপরই তিনি সুফিয়ানের বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে সুফিয়ানকে সঙ্গে নিয়েই সভায় আসেন কুণাল।
মূলত পীযূষকান্তি ভুঁইয়াকে তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির চেয়ারম্যান করার পর থেকেই সুফিয়ান ঘনিষ্ঠরা ক্ষুব্ধ। এক সময় ইস্তফার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন তাঁরা। এ দিন বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে অবশ্য সুফিয়ান ও পীযূষকে পাশাপাশিই বসতে দেখা যায়। সভার মধ্যেই কুণাল দু’জনকে নিয়ে হাত ধরাধরি করে দাঁড়িয়ে ঐক্যের বার্তা দেন। কুণাল বলেন, ‘‘দলের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। সুফিয়ান আমাদের পুরনো নেতা। অনেক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। ক্ষোভ থাকতেই পারে, তবে তিনি দূরে চলে যাননি। নন্দীগ্রামের রবিবারের সমাবেশই বুঝিয়ে দিয়েছে দলে ঐক্য রয়েছে।’’
পরে সুফিয়ানের মন্তব্য, ‘‘আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। কোনও ব্যক্তির প্রতি আমার ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকলেও দলের প্রতি নেই। কুণাল ঘোষ নিজে এসেছিলেন। তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে।’’