কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
ভূপতিনগরে ধৃত দুই তৃণমূল নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-কে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। গ্রামবাসীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘গ্রামে কোনও আগন্তুক এলে মহিলারা শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনি দিয়ে ওদের ঘিরে রাখবেন। যত ক্ষণ না পুলিশ আসে, তত ক্ষণ আপনারা একজোট হয়ে ওদের আটকে রাখবেন। যদি কোনও কারণে আতঙ্কে দৌড়োদৌড়ি হয়, তখন ওরা ঢিল মেরেছে বলে নাটক করবে। আমি মা-বোনেদের পরিষ্কার বলছি, উলু-শঙ্খধ্বনি দেবেন। সকলকে সংঘবদ্ধ করবেন। এলাকায় পুলিশ না ঢোকা পর্যন্ত কোনও আগন্তুককে দেখলে ঘিরে রাখবেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আপনারা (এনআইএ) বিজেপির দেওয়া তালিকা নিয়ে এসে আমাদের লোকেদের তুলে নিয়ে যাবেন, বাড়ির মহিলাদের অসম্মান করবেন, আমরা কি রসগোল্লা খাওয়াব?’’
রবিবার বিকেলে ভূপতিনগরের নাড়ুয়াবিলা গ্রামে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। কুণাল ছাড়াও সেখানে যান রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য-সহ বেশ কয়েক জন। এনআইএ-র হাতে গ্রেফতার হওয়া দুই তৃণমূল নেতা বলাইচরণ মাইতি ও মনোব্রত জানার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা। কুণালের অভিযোগ, গ্রামে এসে রীতিমতো হামলা চালিয়েছে এনআইএ। তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার স্ত্রী বা তার বাড়ির আত্মীয়াদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করা হয়েছে। মহিলারা এই বিষয়ে যা অভিযোগ করেছেন, তাতে সেগুলো রয়েছে।’’
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এনআইএ। বিবৃতি প্রকাশ করে তাদের বক্তব্য, সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। হামলা হয়েছে তাদের উপরেই।
ধৃতদের পরিবারকে দল আইনি সাহায্য করবে বলেও জানালেন কুণাল। তিনি বলেন, ‘‘ধৃত তৃণমূল নেতাদের জন্য যা আইনি সহায়তার প্রয়োজন হবে, তার সবটাই দল বহন করবে। দল বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। মনোব্রত জানার স্ত্রী, ছেলের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। বাবার সঙ্গেও দেখা হয়েছে। এখানকার গ্রামবাসীদের বলছি, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দিষ্ট বার্তা পাঠিয়েছেন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটাটাই নজরে রাখছেন। যাদেরকে অন্যায় ভাবে তুলে নিয়ে গিয়েছে, তাদের পরিবারের পাশে থাকবে দল।’’
নাড়ুয়াবিলা গ্রামে একটি জনসভা করে তৃণমূল। সেই সভা থেকেও বিজেপি ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নিশানা করেছেন কুণাল। কুণালের মতে, ‘‘ষড়যন্ত্র হয়েছে ওদের (এনআইএ) অফিসারের বাড়িতে বসে।’’ কেন এনআইএর এসপি ধনরাম সিংহের বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল। তিনি বলেন, ‘‘জিতেন্দ্র তিওয়ারি যদি আদালতে যেতে চান, তা হলে সাত দিন দেরি করার প্রয়োজন নেই। তিনি চাইলে আগামিকালই আদালতে যেতে পারেন। তৃণমূল সাত দিনের সময় চায় না।’’ জিতেন্দ্রের উদ্দেশে কুণাল বলেন, ‘‘আমরা আজ সাংবাদিক বৈঠকে যে নথি দিয়েছি, তার কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল, আগে সেটা প্রমাণ করুন। আমাদের ফাঁকা আওয়াজ দেবেন না।’’