১| মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুদীপ্ত সেনের বৈঠক হয় কালিম্পংয়ের ডেলোতে হিল কাউন্সিল/জিটিএ বাংলোয়। ওখানেই মুখ্যমন্ত্রী থাকছিলেন।
২| পরপর ২ দিন ২টি বৈঠক হয়। প্রথমটি রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর সঙ্গে। দ্বিতীয়টি সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে। ২টি বৈঠকেই ছিলেন মমতা ব্যানার্জি/মুকুল রায়।
৩| গৌতম কুণ্ডুদের সঙ্গে বৈঠক কালিম্পং-এ কেন, আজও সেটা অজানা।
৪| কেন বৈঠক? আমার অনুমান: ওঁদের নিজস্ব কিছু কথাবার্তা ছিল। যেটা সবসময় ফোনে বা লোক মারফৎ হয় না।
দুই, সেসময় মমতা পর্যটনে খুব জোর দিচ্ছিলেন। যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পের বিজ্ঞাপন দিচ্ছিলেন। কিন্তু সেসব প্রকল্প করতে কেউ আসছিল না। মমতা চাইছিলেন রোজভ্যালি বা সারদা তাঁর মুখরক্ষা করুক। তিনি জমি ইত্যাদি পরিকাঠামো দেবেন নানা জায়গায়। এবং সস্তায় কিছু টুরিস্ট বাংলো করে সরকারের মান বাঁচাক। কিছু রুটে বাস নামাক।
এছাড়া অন্যান্য কথা থাকতে পারে।
৫| এদের আসাটা গোপনীয়তা/নাটকীয়তায় ভরা ছিল। আমরা সবাই বোকা বনেছি। পরে বুঝেছি, মমতা-গৌতম, মমতা-সুদীপ্ত আগে থেকেই জানতেন। বাকি পরিস্থিতিটা সাজানো। আমি, সোমনাথ দত্ত (সারদা সংস্থার সিইও) মূর্খ, গাধা।
৬| মমতা-গৌতম কুণ্ডু দীর্ঘ বৈঠক হয়েছিল।
৭| মমতা-সুদীপ্তও দীর্ঘ বৈঠক। যে অংশটা আমি শুনেছি, তার মধ্যে ছিল:
(ক) মিডিয়া পরিকল্পনা। বিভিন্ন ভাষার কাগজ, চ্যানেল। বিভিন্ন রাজ্যে। মমতা দিল্লি থেকে একটি ইংরেজি কাগজ ও চ্যানেলে জোর দেন। দিল্লি থেকে বাংলা কাগজ মমতার কথাতেই করেছিলেন সুদীপ্ত সেন। পরবর্তী লোকসভা (এই ২০১৪) নির্বাচনে তৃতীয় বিকল্প ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতাকে প্রজেক্ট করে প্রচার নিয়ে খোলাখুলি কথা হয়। মমতা ও সুদীপ্ত দু’জনেই আমাকে বলে দেন, যে ক’টি মিডিয়া আমি দেখি তাতে যেন মমতা/ তৃণমূলের লাইনের বাইরে কোনও খবর না যায়।
(খ) কিছুটা শুনেছি যৌথ উদ্যোগের প্রকল্পে সারদার কিছু টাকা ঢোকানো। মমতা পর্যটনসচিব রাঘবেন্দ্র সিংহকে বৈঠকে ডেকে সুদীপ্তকে পুরো সাহায্য করতে বলেন। জমি দিয়ে বা কোথায় কোথায় কী করা যায়।
(গ) আমি ঢোকা/বেরোন/বসা/ওঠার সময় অন্য কিছু কথা।
(ঘ) সোমনাথ দত্ত নীরব দর্শক।
৮| মমতা সেদিন সুদীপ্তকে/সোমনাথদাকে ওই বাংলোরও একতলায় অতিথি হয়ে থেকে যেতে বলেন। পরদিন ফেরা। ওঁরা তা না করে কালিম্পং শহরে হোটেল ঠিক করা ছিল সেখানে যান।
৯| সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে ওঁর অন্য ব্যবসা নিয়ে আমার কথা হত না। কিন্তু অনুমান/পরবর্তী ইঙ্গিতে বুঝেছিলাম অন্য সব বিষয়ে উৎসাহী হলেও যৌথ উদ্যোগে টাকা ঢেলে রাজ্য সরকারের কাজ করে দিতে সম্ভবত তিনি খুব একটা আগ্রহী ছিলেন না। এনিয়ে মমতা-সুদীপ্ত পরে কী কী কথা হয়েছে, আমি কোনওদিন তার মধ্যে ঢুকিনি। জানি না।
(বানান অপরিবর্তিত)