অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমন পাঠানো নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপি ভয় পায়, তাই বার বার তাঁকেই আক্রমণ করে, কয়লা পাচার-কাণ্ডে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে পাঠানো ইডির সমন প্রসঙ্গে বলল তৃণমূল। মঙ্গলবার সকালে আনন্দবাজার অনলাইনকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘অভিষেক তো প্রতিহিংসার রাজনীতির টার্গেট। এ তো বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির রাজনৈতিক নেতাদের বক্তৃতা থেকেই প্রমাণিত। ওরা অভিষেককে ভয় পায়।’’
মঙ্গলবার সকালেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের নোটিস পান অভিষেক। নোটিসে বলা হয়েছে, রাজ্যে কয়লা পাচারের অভিযোগের যে তদন্ত করছে ইডি, সেই সূত্রেই তারা অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। নোটিসে আগামী শুক্রবার সকাল ১১টার মধ্যে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে আসতে বলা হয়েছে তৃণমূলের সাংসদ তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে। বিভিন্ন সূত্রে এ-ও জানা যায় যে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দিল্লি থেকে আসবেন ইডি-কর্তারা। তবে এমন কিছু যে হতে চলেছে সেই আশঙ্কা ২৪ ঘণ্টা আগেই করেছিলেন অভিষেক।
সোমবার তৃণমূলের ছাত্রপরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসের সভার মঞ্চে অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘এর আগে ২১ জুলাই সমাবেশের পর ২২ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে এসেছিল ইডি... আমার কথা লিখে নিন, আজকের এত ব়়ড় সভার পর, চার-পাঁচ দিনের মধ্যেও ওরা (বিজেপি) আবার কিছু একটা করবে।’’ মঞ্চে বক্তৃতা দিতে উঠে তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘এই তো আজকের সভায় অভিষেক খুব ভাল বক্তৃতা করেছে। এ বার হয়তো আজ অথবা কাল ওকে কোনও সংস্থা নোটিস ধরাবে।’’ মমতা এর সঙ্গে আরও বলেন, ‘‘অভিষেককে তো আগেও দু’বার নোটিস ধরিয়েছে। এমনকি, নোটিস ধরিয়েছে ওর বউকেও। কিন্তু এ বার তো মনে হয় ওর দু’বছরের ছেলেকেও নোটিস ধরাবে। ওকেও নোটিস ধরিয়ে দেখুক দু’বছরের ছেলেটাও কতটা শক্ত হয়েছে।’’ বস্তুত, মমতা এবং অভিষেকের অনুমান সত্যি করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিষেকের কাছে নোটিস আসে কেন্দ্রীয় সংস্থার। যে প্রসঙ্গে কুণাল বলেছেন, ‘‘এটা অভিষেককে টার্গেট করে পুরদস্তুর রাজনৈতিক চক্রান্ত। অভিষেক একাই যথেষ্ট। ও ইস্পাতকঠিন স্নায়ু দিয়ে এর মোকাবিলা করবে।’’
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণালের কথায়, ‘‘বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই দিল্লির নেতারা এসে এবং বিজেপির নেতারা এসে আমাদের তরুণ নেতাদের টার্গেট করছেন। ওনারাই যে ভাবে বলে দেন, এর পর ওর বাড়ি, তার পর তার বাড়ি, তাতে তো বোঝাই যায় যে ওঁরাই করাচ্ছেন।’’
কিন্তু ২৯ অগস্ট সভা করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ৩০ অগস্ট অভিষেককে সমন কি তবে তৃণমূলের পূর্ব অনুমিত ‘চক্রান্ত’? এই প্রশ্নের জবাবে কুণাল বলেছেন, ‘‘এটা তো একটা সামগ্রিকতা। ২১ জুলাই সমাবেশ হয়েছিল, তার পর কী হয়েছে সবাই দেখেছে। বিধানসভায় আমাদের দল জিতেছিল, তার পরে আমাদের দুই মন্ত্রীকে ভোরবেলা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। কাল ব়়ড় সমাবেশ হয়েছে, তার ফল কী হচ্ছে সবাই দেখছে।’’
তবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক যে এ ধরনের চক্রান্তে ভয় পান না, ‘‘তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন কুণাল। অভিষেক কী ভাবে এর মোকাবিলা করবেন, তা জানিয়ে কুণাল বলেছেন, ‘‘দিল্লির নেতারা রাজ্যের নেতারা সব ছেড়ে অভিষেকের পিছনে পড়়েন। তার কারণ অভিষেককে ওঁরা ভয় পান। তবে অভিষেক পুরোটা আইনে বুঝে নেবে। ও ইস্পাত কঠিন। এর আগেও আমরা দেখেছি। দিল্লিতে ৮ ঘণ্টা, ৯ ঘণ্টা জেরার পরেও বেরিয়ে এসে মাথা নিচু না করে তোপ দেগেছে। এই লড়াই অভিষেক চালাচ্ছে এবং ও একাই যথেষ্ট। অন্য দিকে বিজেপি যত ওকে ভয় পাচ্ছে, ততই অ্যাটাক করেছে।’’