ডেলো পাহাড়ের সেই বৈঠক

সুদীপ্ত-মমতা গোপন কথার সাক্ষী সাংসদ

দু-চারটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে দেখা হওয়া ছাড়া তাঁর সঙ্গে সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের কোনও যোগাযোগ কোনও দিনই ছিল না বলে দাবি করে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারদার টাকা রাজ্য সরকার বা শাসক তৃণমূল নিজেদের ‘কাজে’ লাগিয়েছে, তেমন অভিযোগও নস্যাৎ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দল। কিন্তু সারদা-কাণ্ডে জেলবন্দি তৃণমূল সাংসদ (এখন বহিষ্কৃত) কুণাল ঘোষ লিখিত ভাবে মমতার সেই দাবিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে দিয়েছেন। জেলে বসেই কুণাল ৯১ পাতার একটি বিবৃতি লিখেছেন। যা এখন তদন্তকারীদের হেফাজতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২৮
Share:

অঙ্কন- সুমন চৌধুরী

দু-চারটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে দেখা হওয়া ছাড়া তাঁর সঙ্গে সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের কোনও যোগাযোগ কোনও দিনই ছিল না বলে দাবি করে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারদার টাকা রাজ্য সরকার বা শাসক তৃণমূল নিজেদের ‘কাজে’ লাগিয়েছে, তেমন অভিযোগও নস্যাৎ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দল। কিন্তু সারদা-কাণ্ডে জেলবন্দি তৃণমূল সাংসদ (এখন বহিষ্কৃত) কুণাল ঘোষ লিখিত ভাবে মমতার সেই দাবিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে দিয়েছেন। জেলে বসেই কুণাল ৯১ পাতার একটি বিবৃতি লিখেছেন। যা এখন তদন্তকারীদের হেফাজতে।

Advertisement

সেখানেই তিনি লিখেছেন, কালিম্পঙের ডেলোয় মমতার সঙ্গে সুদীপ্ত সেনের গোপন বৈঠকের কথা। তাতে উপস্থিত মুকুল রায়ও। বৈঠকে খানিকক্ষণ তিনি নিজে ছিলেন বলেও কুণাল জানিয়েছেন। রবিবার এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুকুল রায় অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

‘ব্যক্তিগত’ শিরোনামে লেখা কুণালের ওই বিবৃতি কার্যত এক ধরনের জবানবন্দি। তার পাতায় পাতায় রয়েছে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে মমতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের ঝাঁক ঝাঁক নেতা-মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের বিবিধ তথ্য। আছে বিভিন্ন না-জানা বৈঠকের খবর। সারদার কোটি কোটি টাকা কী ভাবে তৃণমূল নেতৃত্ব নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন এবং মমতা নিজেও কী ভাবে সুদীপ্তর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে গিয়েছেন, তাঁর লেখায় বিশদে সে সব বর্ণনা করেছেন কুণাল। নির্দিষ্ট ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তাঁর আরও অভিযোগ, ২০১৩-র ১৮ এপ্রিল সুদীপ্ত সেনের ‘উধাও’ হওয়া এবং তার পরেই সিবিআই-কে লেখা সুদীপ্তর চিঠি প্রকাশ্যে আসার পিছনে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের ‘ভূমিকা’ আছে।

Advertisement

কুণালের লিখিত বক্তব্য ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবে।

সুদীপ্তর সঙ্গে মমতার গোপন বৈঠকের যে তথ্য কুণাল দিয়েছেন, তাতে মনে করা হচ্ছে ২০১২-র মার্চে মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের সময় বৈঠকটি হয়। ১ মার্চ দার্জিলিং থেকে ডেলো পৌঁছান মমতা। ওই দিনই বিকেলে সুদীপ্তকে তিনি ডেকে নেন। একই সফরে রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করেন বলে লিখেছেন কুণাল। রবিবার যোগাযোগ করা হলে গৌতমবাবু জানান, তিনি একা নন, সংস্থার এমডি শিবময় দত্ত এবং বোর্ড অব ডিরেক্টর্সের সব সদস্যই ছিলেন সেই বৈঠকে। গৌতমবাবুর বক্তব্য, উত্তরবঙ্গে তাঁদের চারটি রিসর্ট রয়েছে। সেগুলি যৌথ উদ্যোগে করা যায় কি না, তা নিয়ে কথা বলতে সরকারি ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়ে নিয়েছিলেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement