ফাঁকা ই এম বাইপাস দিয়ে দ্রুত গতিতে যাচ্ছে ট্যাক্সি। পিছনে বসে সন্তান-সহ এক মহিলা। অভিযোগ, মিটারে অস্বাভাবিক ভাড়া উঠতে দেখে মিটার কারচুপি নিয়ে প্রশ্ন করতেই আচমকা ওই মহিলার হাতে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেন ট্যাক্সিচালক। এর পরে গাড়ি থামিয়ে ধাক্কা দিয়ে সন্তান-সহ মহিলাকে ট্যাক্সি থেকে ফেলে টাকা নিয়ে চম্পট দেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার, দোলের দিন সকালে বাইপাসের রুবি মোড়ে। মহিলার কাছ থেকে খবর পেয়ে ২ কিলোমিটার দূরে কালিকাপুর মোড়ে ওই ট্যাক্সিচালককে ধরে ফেলেন পূর্ব যাদবপুর ট্রাফিক গার্ডের অফিসারেরা। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ছিনতাই হওয়া টাকা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত চালকের নাম সুকুমার দত্ত।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই মহিলার বাড়ি আনন্দপুর থানা এলাকায়। এ দিন সকালে তিনি সন্তানকে নিয়ে রাজারহাটে একটি অনুষ্ঠান সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। কসবা যাওয়ার জন্য রাজারহাট থেকে ১০টা নাগাদ ট্যাক্সিতে ওঠেন তিনি। ট্যাক্সিটি তিলজলার পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালের কাছে পৌঁছলে মহিলা লক্ষ্য করেন, মিটারে অস্বাভাবিক ভাড়া উঠেছে। এর পরেই তিনি চালকের কাছে মিটারে কারচুপি নিয়ে প্রতিবাদ জানান এবং বলেন, পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানাবেন। অভিযোগ, রুবি মোড়ের কিছু আগেই আচমকা গাড়ির গতি কমিয়ে দেন চালক। জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গাড়ি আর যাবে না। তাই মহিলাকে সেখানেই নেমে পড়তে হবে বলে নির্দেশ দেন ট্যাক্সিচালক। এই নিয়ে মহিলার সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। তার পরেই ওই ঘটনা।
ওই মহিলার দাবি, তিনি এ দিন বাড়ি থেকে রাজারহাটের ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ট্যাক্সি করেই। তাই তাঁর ধারণা ছিল, মিটারে কত ভাড়া উঠতে পারে। কিন্তু তার থেকে বেশি ভাড়া ওঠায় তিনি প্রতিবাদ করেন। পুলিশের কাছে মিটারের পরীক্ষা করাবেন, তা বলার পরেই গাড়ি খারাপের অজুহাতে তাঁকে রুবির আগেই নেমে যেতে বলেন চালক। কিন্তু সন্তান থাকায় মাঝরাস্তায় নামতে চাননি তিনি। চালককে অনুরোধ করেন রুবির কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। কিন্তু অভিযোগ, চালক সে কথায় আমল দেননি। ওই মহিলা বলেন, “আমি নিজে গাড়ি চালাই। তাই দেখেই বুঝতে পারছিলাম, চালক ইচ্ছে করে ব্রেক কষে ট্যাক্সি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে।” ওই মহিলার আরও অভিযোগ, তাঁর টাকা কেড়ে নিয়ে রুবি মোড়ের আগেই ধাক্কা মেরে তাঁকে ট্যাক্সি থেকে নামিয়ে দেন চালক।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলা এর পরেই রুবি মোড়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকর্মীদের কাছে ওই ট্যাক্সিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। এক পুলিশকর্তা বলেন, “ওই মহিলা আমাদের কাছে ট্যাক্সিটির নম্বর বলতে পেরেছিলেন। আমরা সেই মতো সব ট্রাফিক গার্ডকে সতর্ক করি। কালিকাপুর মোড়ের কাছে পূর্ব যাদবপুর ট্রাফিক গার্ডের ওসি বাবর আলি এবং কনস্টেবল নির্মল দেবনাথ ট্যাক্সিটি দেখতে পেয়ে আটকান।” তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চালক সুকুমার দত্ত-সহ ট্যাক্সিটিকে কসবা থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানেই অভিযুক্ত চালককে শনাক্ত করেন ওই মহিলা। পরে কসবা থানার পুলিশ সুকুমারকে গ্রেফতার করে আলিপুর আদালতে পাঠায়।