মিছিলে আটকে গাড়ি। এ ভাবেই হাসপাতালের পথে। ছবি:সুদীপ্ত ভৌমিক।
সকালে ক্রেন খারাপ, দুপুরে শিক্ষকদের মিছিল সব মিলিয়ে ফের যানজটে নাকাল শহর।
শুক্রবার সকাল ছ’টা নাগাদ চার নম্বর ব্রিজের কাছে বড় ওই ক্রেনটি খারাপ হয়ে যায়। এর ফলে সিআইটি রোড, দরগা রোড, সুরাবর্দি অ্যাভিনিউ, পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়ে ব্যাপক যানজট হয়। আটকে পড়ে বহু গাড়ি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দুপুর একটা বেজে যায়। ফলে এ দিন সকালে অফিস যাওয়ার পথে বিপাকে পড়েন বহু যাত্রী।
যানজটে আটকে থাকা বাসে হাসফাঁস করতে হয় বহু যাত্রীকে। অনেকে আবার সময়ে অফিস পৌঁছনোর জন্য বাস থেকে নেমে মেট্রো ধরার চেষ্টা করেন। যাত্রীরা জানান, প্রতি রাস্তাতেই সার দিয়ে গাড়ি এমন ভাবে দাঁড়িয়ে ছিল যে অটোয় মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছতেও অনেক সময় লেগে যায়।
যোধপুর পার্কের বাসিন্দা সমর রায় মৌলালির এক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তিনি নিয়মিত বাসেই অফিস যাতায়াত করেন। সমরবাবু বলেন, “অন্য দিন বাড়ি থেকে সাড়ে আটটা নাগাদ বেড়িয়ে সাড়ে ন’টার মধ্যে অফিসে পৌঁছে যাই। আজ সেখানে অফিস পৌঁছতে এগারোটা বেজে গেল।”
শুধু অফিস যাত্রীরাই নয়, এ দিন সকালের দুর্ভোগের শিকার হন পড়ুয়ারাও। যানজটে আটকে পড়ে স্কুলগাড়ি, পুলকার। পার্ক সার্কাস এলাকায় অনেক পড়ুয়াকে দেখা যায়, গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেছে নির্ধারিত সময়ে স্কুলে পৌঁছনোর জন্য। ওই এলাকার একটি নামী স্কুলের পড়ুয়া মিতা রায় বলেন, “স্কুল যাওয়ার সময়ে এমন দুর্ভোগে কয়েক বছরের মধ্যে পড়িনি। পিকনিক গার্ডেনের বাড়ি থেকে স্কুলে পৌঁছতে সময় লাগে আধ ঘণ্টা। আজ সেখানে এক ঘণ্টা লেগে গেল।”
সকালের এই ভোগান্তি থেকে পুরোপুরি মুক্তি মেলার আগেই দুপুরে শুরু হয় মিছিলের জের। এ দিন দুপুর একটা নাগাদ শিয়ালদহ স্টেশন থেকে পার্শ্বশিক্ষকদের একটি বড় মিছিল কলেজ স্ট্রিটে এসে পৌঁছয়। ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা জানান, এই মিছিলে দু’হাজারেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন। এই মিছিলের জেরে দুপুরে শিয়ালদহ, মহাত্মা গাঁধী রোড, আমহার্স্ট স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট, সূর্য সেন স্ট্রিট, কলুটোলা স্ট্রিটে গাড়ি চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় আটকে পড়ে সার সার গাড়ি। এই মিছিলের জন্য বহু সাধারণ মানুষ কাজে বেড়িয়ে রাস্তায় আটকে পড়েন। অনেকে আবার কাজের জায়গায় পৌঁছতে না পেরে মাঝপথেই বাড়ি ফিরে যান।
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্শ্বশিক্ষকদের মিছিল কলেজ স্ট্রিটে পৌঁছনোর পরে অংশগ্রহণকারীরা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তাতেই বসে পড়েন। এর ফলে কলেজ স্ট্রিট এবং মহাত্মা গাঁধী রোডে দীর্ঘ ক্ষণ যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়।
এ দিন বিকেল তিনটে নাগাদ রানি রাসমণি রোডে বারো জুলাই কমিটির একটি সমাবেশ ছিল। ট্রাফিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সমাবেশের জন্য এ দিন দুপুরে ধর্মতলা এলাকার বিভিন্ন রাস্তাতেও হাল্কা যানজট হয়।