জল নিয়ে বচসা, গুলিতে যুবক খুন গার্ডেনরিচে

পাড়ার কল থেকে জল নেওয়া ঘিরে বিবাদের জেরে খুন হলেন এক যুবক। রবিবার বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ, গার্ডেনরিচের ব্যানার্জিবাগান এলাকায়। নিহতের নাম মনোজ যাদব (৩০)। প্রতিবেশী সঞ্জীব চৌধুরী তাঁকে গুলি করে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পর থেকে সঞ্জীব ও তার পরিবার পলাতক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৪ ০২:১৫
Share:

পাড়ার কল থেকে জল নেওয়া ঘিরে বিবাদের জেরে খুন হলেন এক যুবক। রবিবার বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ, গার্ডেনরিচের ব্যানার্জিবাগান এলাকায়। নিহতের নাম মনোজ যাদব (৩০)। প্রতিবেশী সঞ্জীব চৌধুরী তাঁকে গুলি করে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পর থেকে সঞ্জীব ও তার পরিবার পলাতক।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্যানার্জিবাগানের ওই এলাকায় জল নেওয়া নিয়ে সঞ্জীব ও তার পরিবারের সঙ্গে এলাকার অন্য বাসিন্দাদের প্রায়ই গোলমাল হত। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মনোজের সঙ্গে এর আগেও কয়েক বার গোলমাল হয়েছে সঞ্জীবদের।

স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, এ দিন জল নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদ চরমে পৌঁছয়। বিকেল চারটে নাগাদ পেশায় গাড়িচালক মনোজ তাঁর বাড়ির সামনের কলে জল আনতে গিয়েছিলেন। তখন জল নিতে এসেছিল সঞ্জীবের পরিবারের লোকেরাও। কে আগে জল নেবে, এ নিয়ে সঞ্জীবের পরিবারের সঙ্গে মনোজের বচসা বাধে। সঞ্জীব ও তার দাদা দীপক এলে বচসা আরও বাড়ে। স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দার হস্তক্ষেপে তখনকার মতো ঝামেলা মিটেও যায়।

Advertisement

এর মিনিট পনেরো বাদে মনোজ ওই গলি দিয়ে বড় রাস্তার দিকে যাচ্ছিলেন। তখন আচমকাই সঞ্জীব ও দীপক ধাওয়া করে মনোজকে। কিছুটা দূরে যাওয়ার পরেই সঞ্জীব তার বন্দুক থেকে গুলি চালায়। কিন্তু সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এর পর মনোজকে জাপটে ধরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ফের গুলি চালায় সঞ্জীব। গুলিটি মনোজের পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, গুরুতর জখম সঞ্জীবকে এসএসকেএম-এ নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আজ, সোমবার তাঁর ময়নাতদন্ত হবে। তবে ঘটনার পরে এলাকা ছেড়ে সঞ্জীব ও দীপক চম্পট দিয়েছে। পুলিশ জেনেছে, সঞ্জীব ও দীপক একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থায় রক্ষী হিসেবে চাকরি করে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, বন্দুকটি ওই সংস্থারই।

এ দিন বিকেলে ব্যানার্জিবাগান এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিরাট পুলিশবাহিনী এলাকা ঘিরে রেখেছে। গলির মুখে রক্তের দাগ। পাশে পড়ে রয়েছে মনোজের চটি। ওই গলিরই ভিতরে মনোজের বাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আট বছর ধরে মনোজ ওই এলাকায় ভাড়া থাকতেন। এলাকায় শান্ত যুবক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। মনোজের স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছে। মেয়েদের স্কুলে ছুটি পড়ে যাওয়ায় তাঁদের নিয়ে এ দিনই মনোজের স্ত্রী জগদ্দলে বাপের বাড়ি গিয়েছেন। তার কয়েকটি ঘর পরেই সঞ্জীবেরা থাকেন। তাদের বাড়ির সামনের গ্রিলের দরজায় তালা। ঘরের ভিতরে ফ্যান ঘুরছে। স্থানীয় বাসিন্দা ওমপ্রকাশ সাউ বলেন, “সঞ্জীবের মা-বোনও পালিয়েছেন।”

সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে যায় লালবাজারের হোমিসাইড শাখার একটি দল। এলাকা থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে দলটি। এলাকার কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদও করেন গোয়েন্দারা। বন্দর এলাকাতেই দীপকের শ্বশুরবাড়ি। সেখানে তারা গিয়েছে কি না, খুঁজে দেখা হচ্ছে। অন্য জায়গাতেও তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement